চলছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। রমজান মাসজুড়ে অনেকের অফিস টাইমে পরিবর্তন এলেও অনেকেই থাকেন বেশ ব্যস্ততায়। শেরপুর জেলা শহরসহ প্রতিটি উপজেলার নিম্ন আয় ও কর্মব্যস্ত মানুষের ইফতারির বড় ভরসা ফুটপাতের বা রাস্তার পাশের খণ্ডকালীন ইফতারী দোকান। অভিজাত হোটেলের মতো দামি ইফতার সামগ্রী না থাকলেও ফুটপাতের এসব দোকানে বাহারি ইফতারির অভাব নেই। বেগুনি, পেঁয়াজু, ছোলার ঘুগনি, মুড়ি, জিলাপি, গরু ও খাসির হালিম, আলু সমুচা, সমুচা, আলুর চপ, শাকের চপ, ভেজিটেবল রোলসহ বাহারি ইফতারি অল্প দামেই সংগ্রহ করতে পারেন কর্মব্যস্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
জেলা শহর থেকে পাড়া-মহল্লার গলির ফুটপাতেও আছে খণ্ডকালীন ইফতার সামগ্রীর বিক্রেতারা। কোথাও কোথাও সারিবদ্ধভাবে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে বসানো হয়েছে ইফতারির দোকান। ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে দোকানিরা রাস্তার ওপর সামিয়ানা ঝুলিয়ে টেবিল পেতে বসে পড়েছেন। রমজানের সময়ে গড়ে ওঠা এসব ইফতারির দোকানে জোহরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয়ে যায় কর্মব্যস্ততা। দোকানিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন জিলাপি, ছোলার ঘুগনি, বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, ডিমের চপ, হালিম, সমুচা, ভেজিটেবল রোল, ভেজিটেবল চপসহ নানা রকমের ইফতার সামগ্রী বিক্রি করতে।
পাড়া-মহল্লা, বাণিজ্যিক এলাকা ও ব্যস্ততম সড়কগুলোর ফুটপাত ঘিরে গড়ে ওঠা ইফতারির দোকানগুলোতে এলাকাভেদে বেগুনি, পেঁয়াজু, সমুচা, আলুর চপ বিক্রি হচ্ছে ৩-৫ টাকা পিস হিসেবে। ডিমের আলুর চপ ১০ থেকে ১৫ টাকা, জালি কাবাব ১০ থেকে ২০ টাকা, ভেজিটেবল রোল ২০ টাকা, জিলাপি প্রতি কেজি ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা এবং জিলাপির পিস ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শহরের নিউমার্কেট মোড়ে ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসা মিজান বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে আমি এখানে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছি। আমাদের কাছ থেকে সাধারণত বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইফতারি কিনে নিয়ে যায়। ছোলা, মুড়ি, বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, জিলাপি আমাদের কাছ থেকে যে কেউ স্বল্প মূল্যে কিনে নিয়ে যেতে পারেন।
নতুন বাস ষ্ট্যান্ড এলাকার ইফতারি বিক্রেতা মোশারফ বলেন, অফিসের কাজের জন্য অথবা বিশেষ কোনো কাজে অনেকে আটকা পড়ে যান। ইফতারির নির্ধারিত সময়ে বাসায় পৌঁছতে পারেন না। আবার অনেকে মেসে থাকেন, সেখানে তাদের জন্য ইফতারির আয়োজন করা হয় না। সাধারণত এমন ব্যক্তিরাই ফুটপাতে ইফতার করেন। তারা যাতে অল্প টাকায় ইফতারি করতে পারেন যে চিন্তা করেই আমরা ইফতারির খাবার তৈরি করি।
এদিকে পৌর শহরের আহার হোটেল, আলীশান হোটেল, হোটেল আবীর নিবিড়সহ বেশিরভাগ হোটেলে প্যাকেজ ও ভিন্ন দামে ইফতার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৮০ টাকা থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে বেশ ভালো মানের ইফতার সরবরাহ করছে এসব হোটেলে। প্যাকেজ ইফতারে রয়েছে কোমল পানীয়, জিলাপি, আলু ও ডিমের চপ, মুড়ি, বিরিয়ানি, ফল ইত্যাদি। যারা ব্যস্ততায় বাসায় ইফতার করার সুযোগ পাননা, তাদের জন্য এসব প্যাকেজ ইফতার বেশ সহযোগী।