নাঈম ইসলাম : বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে নামিদামি প্রতিষ্ঠানের ৫২টি পণ্য ভেজাল ও নিম্নমানের। হাইকোর্ট এ পণ্যগুলো বাতিল ঘোষণা করে বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
হাইকোর্টের নির্দেশের পরও এখনো শেরপুরের অনেক দোকানেই সিটি গ্রুপ, এসিআই, ড্যানিশ, প্রাণসহ নামিদামি এসব প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলো নিম্নমানের প্রমাণিত হওয়ার পরেও পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসন বলছে ইতিমধ্যে তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে ও তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনসাধারণকে সচেতন করা হয়েছে। অফিসিয়ালি নির্দেশনা পেলে অামরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এইসব নিম্নমানের বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারে সিটি গ্রুপের তীর সরিষার তেল, এসিআই এর লবণ, মসলা, মোল্লা লবণ, প্রাণের হলুদ গুঁড়া বিক্রি করছে, এর কারণ বাতিল এই ৫২ পণ্য সম্পর্কে জানেনা অনেক ক্রেতা-বিক্রেতারা।
এ বিষয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা পেপার-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন- আদালত ৫২টি পণ্য বাতিল ঘোষণা করেছেন উচ্চ আদালত। তবে কোন কোম্পানি এবং পণ্যগুলো কী কী, এ সম্পর্কে তাদের তেমন ধারণা নেই। তাই পণ্যগুলোর বিষয়ে এখনো তারা কোনো ব্যবস্থা বা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। এছাড়া কোম্পানির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্যও আসেনি।
শহরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানদার বলেন, আমরা শুনেছি ৫২টি পণ্য আদালত বাতিল করছেন, কিন্তু তা সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা পায়নি। তাই সব পণ্যই আমরা এখনো বেচাকেনা করছি। তবে বাতিল পণ্যগুলোর সুনির্দিষ্ট তালিকা বা ধারণা পাওয়ার পর কোম্পানিকে এগুলো ফিরিয়ে দেব।
এদিকে কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা পেপার-পত্রিকায় দেখেছেন ৫২টি পণ্য বাতিল ঘোষণার কথা। তবে সবগুলো পণ্য ও কোম্পানির নাম এখনো না জানতে পারায় তারা কিছুটা দ্বিধায় আছেন।
নয়ানী বাজারে বাজার করতে আসা বাংলাদেশ একতা সংঘের সভাপতি আরিফুর রহমান আকিব বলেন, খবরে শুনেছি প্রাণ ও ড্যানিশের কয়েকটি পণ্য বাতিল হয়েছে। আজ সবগুলো বাতিল পণ্যের তালিকা দেখে নেব। দেখার পর এসব ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকব।
তবে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, দোকান থেকে এসব বাতিল পণ্য স্ব স্ব কোম্পানি যেন দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে তাদের হিসাব শেষ করে নেয়, আর এ ব্যাপারে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায়।
ভেজাল পণ্যগুলো হলো-সিটি ওয়েলের সরিষার তেল, গ্রিন বি চিং এর সরিষার তেল, শমনমের সরিষার তেল, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের সরিষার তেল, কাশেম ফুডের চিপস, আরা ফুডের ড্রিংকিং ওয়াটার, আল সাফির ড্রিংকিং ওয়াটার, মিজান ড্রিংকিং ওয়াটার, মর্ণ ডিউয়ের ড্রিংকিং ওয়াটার, ডানকান ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার, আরার ডিউ ড্রিংকিং ওয়াটার, দিঘী ড্রিংকিং ওয়াটার, প্রাণের লাচ্ছা সেমাই, ডুডলি নুডলস, শান্ত ফুডের সফট ড্রিংক পাউডার, জাহাঙ্গীর ফুড সফট ড্রিংক পাউডার, ড্যানিশের হলুদের গুড়া, প্রাণের হলুদ গুড়া, ফ্রেশের হলুদ গুড়া, এসিআইর ধনিয়ার গুড়া, প্রাণের কারি পাউডার, ড্যানিশের কারী পাউডার, বনলতার ঘি, পিওর হাটহাজারী মরিচ গুড়া, মিস্টিমেলা লাচ্ছা সেমাই, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মিঠাইর লাচ্ছা সেমাই, ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, এসিআইর আয়োডিন যুক্ত লবণ, মোল্লা সল্টের আয়োডিন যুক্ত লবণ, কিং’য়ের ময়দা, রূপসার দই, মক্কার চানাচুর, মেহেদীর বিস্কুট, বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, নিশিতা ফুডস এর সুজি, মঞ্জিলের হলুদ গুড়া, মধুমতির আয়োডিন যুক্ত লবন, সান ফুডের হলুদ গুড়া, গ্রীন লেনের মধু, কিরণের লাচ্ছা সেমাই, ডলফিনের মরিচের গুড়া, ডলফিনের হলুদের গুড়া, সূর্যের মরিচের গুড়া, জেদ্দার লাচ্ছা সেমাই, অমৃতের লাচ্ছা সেমাই, দাদা সুপারের আয়োডিন যুক্ত লবণ, মদীনার আয়োডিন য্ক্তু লবণ, নুরের আয়োডিন যুক্ত লবণ।
এদিকে জেলা প্রশাসন বলছে ইতিমধ্যে তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে ও তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনসাধারণকে সচেতন করা হয়েছে। অফিসিয়ালি নির্দেশনা পেলে অামরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো