শেরপুর জেলার বিভিন্ন কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার ফরমপূরণে সরকার নির্ধারিত ফি এর বাইরেও প্রস্তুতি কোচিংসহ বিভিন্ন খাত দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে পোষ্ট করতে দেখা গেছে। সেই সাথে সাম্প্রতিক সময়ে এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রদক্ষেপ গ্রহণ ও এই অরাজকতা বন্ধের দাবীও জানিয়েছেন অনেকেই।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি খবরও প্রকাশিত হলেও এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ হয়নি বলে জানা গেছে। এব্যপারে আজ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একটি মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত অনেকেই এই কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা ও এটি বন্ধে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুক্তভোগীদের দেয়া বিভিন্ন স্ট্যাটাসে শিক্ষকদের প্রতি তীব্র নিন্দা সহ এটি অবিলম্বে বন্ধ না হলে আন্দোলনের হুমকিও দেয়া হয়েছে। আবার অনেকে এই অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধে জেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
অতিরিক্ত ফি বন্ধ এবং বোর্ড ফি দিয়ে ফরম পূরণ করার দাবীতে (১৮ ডিসেম্বর) সোমবার সকালে সদর উপজেলার জমশেদ আলী মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রায় অর্ধশত হতদরিদ্র শিক্ষার্থী শেরপুর জেলা প্রশাসক কক্ষের সন্মুখের বারান্দায় অবস্থান নেয়।
পরে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে ভুক্তভোগী শিার্থীরা কেবল মাত্র বোর্ড ফি দিয়ে দিয়ে ফরম ফিলাপের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তাদের অবস্থান তুলে নেয়।
এদিকে শহরের মডেল গাল্র্স কলেজের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ফরম ফিলাপের জন্য বোর্ড ফি’র সাথে কোচিং এর টাকা না দিলে স্যারেরা ফরমই দিচ্ছে না।
একই ভাবে শেরপুর সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ডা. সেকান্দর আলী কলেজ ও মডেল গার্ল্স কলেজেও ফরমফিলাপের সাথে অতিরিক্ত ফি বা অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেছেন উল্লেখিত কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থী।
তবে এ ব্যাপারে শেরপুর সরকারী কলেজের উপধাক্ষ্য সারোয়ার হোসেন বলেন, ফরমফিলাপে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে না। তবে বোর্ডের ম্যানুয়াল অনুযায়ী ৪ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত কাসের জন্য নেয়া হচ্ছে।
মডেল গাল্স কলেজের অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমান হেলাল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আমাদের কলেজে ফরমফিলাপে অতিরিক্ত কোন ফি আদায় করছি না। তবে কোচিং এর বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। কলেজ শিক্ষক ও ছাত্ররা এসব বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন ছাত্রদের লিখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ফরম ফিলাপ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কলেজ কর্তৃপক্ষের আচরণ খুবই দুঃখজনক। আমি এক কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। এছাড়া অন্যান্য কলেজের আরো কোন দরিদ্র শিক্ষার্থী’র টাকার জন্য ফরমফিলাপ করতে সমস্যা হলে আমার কাছে আবেদন করলে ব্যবস্থা করা হবে।