শ্রীবরদীতে ন্যাশনাল সার্ভিসে বৈধ প্রার্থীদের অন্তর্ভুক্তির দাবী। যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে তালা দিয়ে ইউএনও অফিসে অবস্থান নিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বহিরাগত, অযোগ্য ভূয়া সার্টিফিকেটধারীদের বাতিল করে যোগ্য ও শ্রীবরদী উপজেলা স্থায়ী বেকার যাদের বয়স ২৪-৩৫ এমন প্রার্থীদের ন্যাশনাল সার্ভিসে অন্তর্ভুক্তির দাবী করলে চাপের মুখে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অবস্থান নেয়। পরে থানা পুলিশ খবর পেয়ে যুব উন্নয়ন অফিসে আসে। এসময় ওই প্রার্থীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
জানা গেছে, ২৯ আগস্ট যুব উন্নয়ন অধিদফতর ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচীর আওতায় অস্থায়ী কর্মসংস্থানের জন্য শ্রীবরদী উপজেলার বেকার যুবক ও যুব নারীদের নিকট দরখাস্ত আহবান করেন। আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ৩০ সেপ্টেম্বর। প্রকাশিত বিক্তপ্তি অনুসারে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচীতে অন্তর্ভূক্তির জন্য বেকার প্রার্থীর বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। শেষদিন পর্যন্ত ৫ হাজার ৫শত ৪৬ জন প্রার্থী এ কর্মসূচীতে অন্তর্ভূক্তির জন্য আবেদন জমা দেয়। দীর্ঘদিন ধরে যাচাই বাছাই শেষে গত ২ ডিসেম্বর ৩ হাজার ৭ শত ৭০ জন প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত তালিকায় সকল যোগ্যতা থাকা সত্বেও বাদ পড়েছে এ উপজেলার অনেক প্রার্থী। কিন্তু ভূয়া শিক্ষাগত সনদ ব্যবহার করে, বয়স উত্তীর্ণ বা বয়স হয়নি ও অন্য উপজেলার অনেক প্রার্থী চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে। এতে প্রকৃত প্রার্থী ও উপজেলাবাসী ফুঁসে উঠেছে। পরে ওই দিনই তালিকা থেকে বাদ পরা প্রার্থীদের আপিল করার সুযোগ দেন। এসময় ১ হাজার ৪০ জন প্রার্থী আপিল করেন। ৬ ডিসেম্বর ৬ শত ৭ জন প্রার্থীর নাম তালিকা করে প্রকাশ করা হয়। এতে করেও অনেক বৈধ প্রার্থীর নাম তালিকা থেকে বাদ পরে যায়। এনিয়ে ন্যাশনাল সার্ভিসে আবেদনকারী উপজেলার স্থায়ী যোগ্যতা সম্পন্ন বৈধ প্রার্থীরা তালিকাভুক্তির দাবীতে ও বহিরাগত, অযোগ্য ভূয়া সার্টিফিকেটধারীদের বাতিল করার জন্য যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে চাপ প্রয়োগ করেন। তাদের চাপে মুখে যুব উন্নয়ন কমকর্তা-কর্মচারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অবস্থান নেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক প্রার্থী জানান, ন্যাশনাল সার্ভিসে কোটি টাকা বাণিজ্য হয়েছে। এছাড়া, অফিস পাড়া থেকে শুরু করে হোটেল রেস্তোরা ও টি স্টলে বিষয়টি টক অব দি টাউনে পরিণত হয়েছে।
এব্যাপারে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হামিদুর রহমান জানান, দুপুরে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ্ব অযোগ্য ও অবৈধ প্রার্থীদের তালিকা থেকে বাতিল করে শ্রীবরদী উপজেলার স্থায়ী ও যোগ্য প্রার্থীদের তালিকাভুক্ত করার জন্য নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। পরে পিয়ন দ্বারা অফিসে তালা দিয়ে নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে চলে আসি। এনিয়ে ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক জিয়াউল হক জেনারেলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যুব উন্নয়ন অফিসে তালা দেয় নাই। বৈধ প্রার্থীরা তাদের দাবী আদায়ের কথা বললে যুব উন্নয়ন অফিসার পিয়ন দ্বারা অফিসে তালা দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে চলে যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদা নাছরিন বলেন, এটা সরকারের একটা মহৎ উদ্দ্যোগ। ছাত্রলীগ এনিয়ে ঝামেলা করলে শ্রীবরদী বাসীদের ক্ষতি হবে। আমি আজ আছি কাল নাও থাকতে পারি, হয়তো বিজয় দিবসের পরেই চলে যাব। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে বলেন, আপনারা অফিসে গিয়ে কাজ করেন। আর কোনো সমস্যা হবে না, হলে আমি দেখবো।
শেরপুর টাইমস/ বা.স