জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ঝিনাইগাতীতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার দু’গ্রুপের চলমান দীর্ঘদিনের কোন্দল নিরসন হয়েছে। আজ বিকাল সাড়ে ৩ টায় স্থানীয় মিল মালিক ও খাদ্য ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতির কার্যালয়ে উভয় পক্ষের একটি সমঝোতা বৈঠকের মাধ্যমে এই কোন্দল নিরসনের সিদ্ধান্ত হয়।
উভয় পক্ষের একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২০১৪ সালের ২৮ নভেম্বর স্থানীয় ঐতিহাসিক আমতলায় ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামীলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংগঠিত তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে দু’টি পৃথক মামলা নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যাহার ও একই মতাদর্শের দুইগ্রুপ আবারো একসাথে পথচলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সমঝোতা বৈঠকে সাংগঠনিকভাবে কোন পালাবদলের কথা আলোচনায় উথ্থাপন করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন বৈঠকে উপস্থিত থাকা একাধিক সূত্র।
গত ২০১৪ সালের ২৮ নভেম্বরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই বছরের ৩০ নভেম্বর দ্রুত আইনে ৭৫ জনকে এবং আরো একটি মামলায় ৮১ জনকে আসামী করে মামলা করা হলে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। এই দু’টি মামলায় স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে ৬৮ জন প্রায় দেড় মাস কারাভোগ করেন। এদিকে এই ঘটনায় বিগত সময়ের পর থেকে ঝিনাইগাতীতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যপক উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির ঘটনাও ঘটেছে।
তবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ বিকেলে ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের চলমান দীর্ঘদিনের কোন্দল নিরসন হয়েছে। তথ্য মতে, জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম ও ঐসময়ের দায়ের করা মামলার আসামী জুলগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল মমিনের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে আজ এই সমঝোতা বৈঠক ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এব্যপারে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ মোবাইলে শেরপুর টাইমসকে বলেন, দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর নির্বাচনকে সামনে রেখে একই মতাদর্শের দুটি গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের নিরসন হয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার সাবেক সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মোবাইলে বলেন, উভয় গ্রুপের আপোষ মিমাংসার প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। আজ উভয় পক্ষ বসে এই আপোষ করা হয়েছে। সাংগঠনিকভাবে একই পরিবারের লোক আবার একই কাতারে একসাথে পথ চলা শুরু হলো।
আজকের সমঝোতা বৈঠক ও আলোচনা সম্পর্কে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব এসএমএ ওয়ারেজ নাইম শেরপুর টাইমসকে বলেন, ওরাও আমাদেরই অংশ। একটি ভুল বুঝাবুঝি নিয়ে তারা দূরে ছিলো। এখন উভয় পক্ষই সমঝোতায় পৌঁছলাম আমরা। কোন শর্তে নয়, আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে এক কাতারে আসলাম। দায়ের করা মামলাগুলো কোর্টের নিয়মের মধ্য দিয়ে শেষ করা হবে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ঝিনাইগাতীতে মনোয়নের জন্য আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হলাম।
সমঝোতা বৈঠক ও আলোচনায় ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব এসএমএ ওয়ারেজ নাইম, সাধারন সম্পাদক আমিরুজ্জামান লেবু, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবু তাহের, জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জমশেদ আলী, ঝিনাইগাতী উপজেলার ৫ ইউপি চেয়ারম্যান, ঝিনাইগাতী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম আহবায়ক শাহ আলম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ, ছাত্রলীগ সভাপতি মশিউর রহমান, ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক শাহরিয়ার শাওনসহ দু’গ্রুপের নেতৃস্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সাময়িক ভুলবুঝাবুঝির অবসান করে একই মতাদর্শের দুটি গ্রুপ একসাথে পথচলা শুরু করায় ইতোমধ্যে ঝিনাইগাতীতে বইছে তৃপ্তির বন্যা। সমঝোতা বৈঠক শেষে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে উপস্থিতদের মাঝে। সকল মতভেদ মুছে ফেলে আবারো এক হয়ে ঝিনাইগাতীর মানুষের জন্য ঝিনাইগাতী আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে এমনটাই প্রত্যাশা সকল আওয়ামী সমর্থক ও ঝিনাইগাতীবাসীর।