শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে উন্নয়নশীল প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তিরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে তারা মনে করেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন তারা হত্যা করতে পারবে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বেরবুকে বাংলাদেশ এখন দরিদ্র স্বল্পোন্নত দেশ নয়, উন্নয়নের এক বিষ্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষ তেপান্তরে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন (ইডিসি) প্রকল্পের ভুমিকা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দেশে এখন ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হয়েছেন। ১৮ কোটি সিমকার্ড ব্যবহার হচ্ছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে ২৫ হাজার নারী উদ্যোগক্তা তৈরি করা হবে। এসব উদ্যোগক্তাদের ৫ মাসের প্রশিক্ষণ, ১ মাসের ইর্ন্টানশীপ ও ২০ হাজার টাকা করে পুঁজি দেয়া হবে। যাতে তারা উদ্যোগক্তা হয়ে সফল হতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, উদ্যোগক্তা হতে হলে তেমন কিছু লাগেনা, বিদ্যুত, ইন্টারনেট সংযোগ ও একটি ল্যাপটপ লাগে। বিদেশীরা করোনা ভ্যাকসিনের সফটওয়ার তৈরির জন্য ১৫০ কোটি টাকা চেয়েছিল। দেশের তরুণ প্রযুক্তিবীদরা বিনামূল্যে এই সুরক্ষা সফটওয়ার তৈরি করেছে। এছাড়া বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের ‘বন্ধন সিস্টেম’ অল্প দিনের মধ্যেই তৈরি হবে। এমন দেশ প্রেমিক প্রযুক্তিযোদ্ধা তৈরি করার জন্য সরকার কাজ করছে। ৯৯৯, ৩৩৩ ও ১০৬ নম্বরে কল করে মানুষ জরুরী সেবা পাচ্ছে।
জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ২০১৬ সালে এটুআই ই- নথী চালু করেছে। এতে ঘরে বসে অফিসিয়াল কাজ করা যাচ্ছে। ২০১৬-২০২২ সাল পর্যন্ত ১ কোটি ৭৫ লক্ষ ফাইল ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পাদন করা হয়েছে। বর্তমানে সাড়ে ৬ লক্ষ ছেলেমেয়ে গ্রাম ও শহরে বসে ৭ শ মিলিয়ন ডলারের উপরে আয় করছে। প্রযুক্তিশিল্প থেকে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ প্রযুক্তিশিল্প থেকে ২০২৫ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা। সেজন্য হাইটেক পার্কের আওতায় সারাদেশের ৬৪ জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার ও ৯২ টি হাইটেক পার্ক করা হয়েছে। শেরপুরেও ২০২৩ সালের মধ্যে ৮৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ৫ একর জমিতে হাইটেক পার্কের কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া ইডিসি প্রকল্পের আওতায় ৬৪ জেলায় ৫৫৫টি জয় ডিজিটাল সার্ভিস ইমপ্লয়মেন্ট এন্ড ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনের কাজ শুরু করার কথা জানান তিনি।
এর আগে উপজেলার কাকরকান্দি গ্রামের সফল ফ্রিল্যান্সার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তৃষ্ণা দিও এর সেন্টার পরিদর্শন করে প্রতিমন্ত্রী তাকে একটি ল্যাপটপ উপহার দেন।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তারের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, আইসিটি ডিভিশন ও ইডিসি প্রকল্প পরিচালক ডঃ খন্দকার আজিজুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোস্তফা কামাল (অতিরিক্ত সচিব), শেরপুরের পুলিশ সুপার কামারুজ্জামান, নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু, ইউএনও হেলেনা পারভীন, পৌর মেয়র আবুবকর সিদ্দিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল হক, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ বকুল, উদ্যোগক্তা, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ।