শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পল্লীবিদ্যুতের দীর্ঘ সময় ঘনঘন লোড শেডিং এর কারনে চলমান ইরি-বোরো আবাদে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। তাই প্রয়োাজনমতো সেচ দিতে না পারায় বোরো ক্ষেত ফাটতে শুরু করেছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবারের বোরো মৌসুমে ১৯ হাজার ৮ শ হেক্টর জমি বোরো আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে বৈদ্যুতিক সেচ নির্ভর জমি রয়েছে ৬ হাজার ৮ শ হেক্টর। অন্য প্রক্রিয়ায় আবাদকৃত জমির ধানের লক্ষণ ভাল দেখা গেলেও বৈদ্যুতিক সেচ নির্ভর জমির ক্ষেত ইতিমধ্যেই ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। এমনাবস্থা চলতে থাকলে বোরো আবাদ ঘরে তুলতে পারবেন না বলে ভুক্তভুগি কৃষকরা জানান।
উপজেলার চাটকিয়া গ্রামের কৃষক নিরঞ্জন চন্দ্র বর্মণ (৩৫) বলেন, এক একর জমি লাগানোর পরিকল্পনা থাকলেও বিদ্যুতের গোলযোগের কারনে মাত্র দশ শতক জমি লাগিয়েছি। আন্ধারুপাড়া গ্রামের অপর কৃষক আব্দুল খালেক (৪৫) বলেন, বৈদ্যুতিক সেচ পাম্পের সাহায্যে দুই একর জমি লাগিয়েছি। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র ২/৩ ঘন্টা বিদ্যুত পাওয়ায় জমির চাহিদা অনুয়ায়ী সেচ দিতে পারছিনা। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান না হলে বোরো আবাদে আমাদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হবে।
বিএডিসি’র স্কিম ম্যানেজার কামাল হোসেন (৩৬) বলেন, দিনে কমপক্ষে ১২ ঘন্টা বিদ্যুত না পেলে আমরা সুষ্ঠভাবে সেচ দিতে পারব না। লোড শেডিং থাকার জন্য আমি বৈদ্যুতিক মোটরের পাশাপাশি ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে কৃষকদের সেচ দিচ্ছি। এতে কৃষকের ধান উৎপাদন খরচ পরবে বেশি।
নালিতাবাড়ী পল্লী বিদ্যুত বিভাগ জানায়, এ উপজেলায় ৩৫ মেঘাওয়াট পল্লীবিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে দেওয়া হচ্ছে মাত্র ১২/১৫ মেঘাওয়াট। যে কারনে সুষ্ঠভাবে তা বণ্টন করা যাচ্ছে না। যা পাওয়া যায় বেশির ভাগ শহরেই বিতরন করা হয়। তারা আরো জানায়, ময়মনসিংহ থেকে জামালপুর পর্যন্ত ১ লাখ ৩২ হাজার পাওয়ার গ্রিডের লাইন পুরাতন হওয়ায় প্রয়োজনীয় লোড দেওয়া যায় না। তার পুড়ে যায়, এজন্য বাধ্য হয়েই ঘনঘন লোড শেডিং দেওয়া হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ এটি মেরামত করা হবে তা তারা বলতে পারেননি। তাই পিডিপি’র বরাদ্ধ একটু কমিয়ে ওই বরাদ্ধ পল্লীবিদ্যুতে যোগ করা হলে লোড শেডিং কিছুটা কমানো যাবে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শরীফ ইকবাল বলেন, এভাবে লোড শেডিং চলতে থাকলে বোরো আবাদে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। তাই কৃষকের ফসল বাঁচাতে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বিদ্যুত বিভাগকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।