শেরপুরের শ্রীবরদীতে কৃষকের বসতঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার (১১ মার্চ) গভীর রাতে শ্রীবরদি উপজেলার ভেলুয়া ইউনিয়নের ডনডনিয়া গ্রামে দরিদ্র কৃষক বাবুল মিয়ার বসত ঘরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় শ্যামল মিয়া বলেন, শুক্রবার মধ্য রাতে হঠাৎ ডাক চিৎকারের শব্দ শুনি। ঘর হতে বের হয় দেখি, বাবুলের ঘরে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। এরপর আমরা আরো কয়েকজন মিলে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ততক্ষণে ঘরের সবকিছু পুড়ে শেষ। বাবুল মিয়া একজন দরিদ্র পরিবারের মানুষ। তিনি দিন আনে দিন খায়। পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী বাবুল মিয়া জানায়, বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) আমি সন্ধ্যায় বাড়িতে আসি। রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ মধ্যরাতে স্ত্রীর চিৎচিৎকার শুনে উঠে দেখি, ঘরের চারপাশে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। দৌঁড়ে দরজা খুলতে গেলে দরজা আটকানো, বাইরে থেকে তালা দিয়ে আটকিয়ে দেওয়ায় দরজা আর খুলতে না পেরে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশ দিয়ে টিনের বেড়া ভেঙ্গে বাইরে বের হই।
বাবুল আরও বলেন, আমরা ৫ ভাই ও ৩ বোন। প্রায়ই বোনেরা আমার কাছে পৈতৃক সম্পত্তির ওয়ারিশ নিয়ে কথা বলে। এবিষয়ে আমি ভাইদের সাথে আলোচনা করতে গেলে, তারা ওয়ারিস না দিয়ে উল্টো আমাকে হুমকি দেয়।
এছাড়াও গত ইউপি নির্বাচনে তারা ছিল এক চেয়ারম্যানের সমর্থক আর আমি অন্য চেয়ারম্যানের পক্ষে কাজ করেছি। এবিষয়েও তারা আমাকে হেনস্থা করেছে।
আগুনে পুড়ে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে তিনি বলেন, আগুনে আমার সব নিয়ে গেছে। ঘরে জমানো প্রায় দেড় লাখ টাকা, গোলার ধান, বিভিন্ন আসবাবপত্র, চাউল, কবুতর সব পুড়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।
বাবুলের স্ত্রী কোকিলা বেগম জানান, আমার ২০- ২২ বছরের সংসার। দীর্ঘ জীবনে আমার দেবর-ভাসুরেরা আমাকে অনেক অত্যাচার করেছে। অনেকবার মারধরও করেছে। সেই রাতে হঠাৎ শব্দে আমার ঘুম ভাঙ্গে। উঠে দেখি ঘরের দক্ষিণ পার্শ্বে আগুন। এরপর আমার স্বামিকে ডেকে তুলি। আমরা যেন বের হতে না পারে সে জন্য বাইরে থেকে দরজা তালা দেওয়া ছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের পরিবারের ৪ সদস্যকে ঘরের মধ্যে পুড়িয়ে মারা।
অভিযোগ অস্বীকার করে বাবুলের ছোট ভাই বাদল বলেন, আমরা ৪ ভাই কেউ একাজের সাথে জড়িত নয়। আমরা চক্রান্তের শিকার। আমার ভাই বাবুল নিজে তার ঘরে আগুন দিয়েছে। আমি নিজেই এটার সাক্ষী। সেই রাতে আমি দেখেছি বাবুল তার ঘর হতে টেলিভিশন বের করে অন্য বাড়িতে নিচ্ছে। এত রাতে আপনি বাইরে কি করছিলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বাদল বলেন, আমি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছিলাম।
ভেলুয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম জানান, আমি সকালেই ঘটনাস্থলে আসি। বাবুল মিয়ার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমরা তাকে সহযোগীতা করার চেষ্টা করবো।
এব্যাপারে শ্রীবরদি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, এখন পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।