শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বিভিন্ন দাবী-দাওয়া পূরণ না করায় বয়োজেষ্ঠ্য ভাতিজা আব্দুস সালাম তারই চাচা নন্নী ইউপি চেয়ারম্যান রিটনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। শুক্রবার (৪ জুন) দুপুরে নন্নী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করে বিষয়টি জানান নন্নী ইউপি চেয়ারম্যান একেএম মাহবুবুর রহমান রিটন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, রিটন চেয়ারম্যান এর পিতা মৃত হাজী হাফিজুর রহমান এর জীবদ্দশায় তার আপন ভাতিজা মৃত খলিলুর রহমান ও ফজল হক এ দুই ভাই বিভিন্ন সময় প্রায় ১৫-১৭ একর জমি বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করে দেন। সবশেষ এ দুই ভাইয়ের প্রায় ৭-৮ কাঠার বসতভিটা বিক্রি করেন মৃত হাফিজুর রহমান এর কাছে। তাদের মৃত্যুর পর খলিল এর ছেলে আব্দুস সালাম তার নামে থাকা সাড়ে ৬ শতাংশ জমি তারই চাচা বর্তমান নন্নী চেয়ারম্যান রিটন এবং অন্য তিন চাচা মুঞ্জুরুল, আব্দুল্লাহ ও রিপন এ চারজনের কাছে সাফকবলা বিক্রি করে দেন এবং একজন উপাজাতি নারীকে বিয়ের প্রায় ৩০ বছর আগে এলাকা ছেড়ে চলে যান।
এরই মধ্যে সালামের ভগ্নিপতির বাড়িতে তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের এলজিএসপি-২ প্রকল্পের অধীনে একটি নলকূপ প্রদান করেন। যা একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করে।
কিছুদিন আগে বয়োজেষ্ঠ্য ভাতিজা সালাম বাড়ি ফিরে আসেন এবং চাচাদের কাছে বিভিন্ন সময়ে বিক্রিত জমি নিজের বলে দাবী করেন। এ নিয়ে চাচা-ভাতিজার মধ্যে দূরত্ব চলছিল।
সম্প্রতি ভাতিজা সালাম চাচা রিটন চেয়ারম্যান এর কাছে একটি সরকারী বরাদ্দের সাবমার্সিবল পাম্প দাবী করেন। কিন্তু একই বাড়িতে অন্য নামে আগের পরিষদ কর্তৃক নলকূপ প্রদানের পর আপন ভাতিজাকে সাবমার্সিবল বরাদ্দ দিলে স্বজন প্রীতির বিতর্ক উঠবে বলে তিনি সম্মত হননি। এ নিয়ে ভাতিজা সালাম চাচা রিটনের উপর অভিমান করেন।
ছাইচাকুড়া গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম বাবুল জানান, আমাদের আগের পরিষদ কর্তৃক গৃহীত এলজিএসপি-২ প্রকল্প থেকে সালামের বাড়িতে ওই সময় বসবাসরত ব্যক্তির নামে সরকারী নলকূপ দেওয়া হয়। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী কাজটি বাস্তবায়ন করে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মূলত সালামের নামে কোন নলকূপই বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। কাজেই তিনি চেয়ারম্যান রিটনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন তা ভিত্তিহীন।
আব্দুস সালাম জানান, আমি নিজে নলকুপ কিনে বাড়িতে বসিয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদের কোন প্রকল্প ছিল কি না তা জানি না। তবে জমিজমা নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। এসব বিষয়ে আমি বসতে চাইলে তারা রাজি হননি। তিনি চেয়ারম্যানের কাছে সাবমার্সেবল পাম্প চেয়েছিলেন বলেও জানান।
এ ব্যাপারে নন্নী ইউপি চেয়ারম্যান একেএম মাহবুবুর রহমান রিটন জানান, কিছুদিন আগে আমাদের বংশের বয়োজেষ্ঠ্য ভাতিজা সালাম আমার কাছে সাবমার্সিবল পাম্প চেয়েছিলেন। একই বাড়িতে সরকারী বরাদ্দের নলকুপ আছে। তাই একাধিক সুবিধা প্রদান করলে বিতর্ক হবে বিধায় দেইনি। এজন্য ভাতিজা মন খারাপ করে আমার বিরুদ্ধে ভুল তথ্য দিয়েছে। মূলত, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের এলজিএসপি-২ প্রকল্পটি আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগে নেওয়া। যা ২০১৬ সালের জুনেই শেষ হওয়ার কথা। আর আমাদের বর্তমান পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণ করেছি ২০১৬ সালের ১০ জুলাই। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে একটি মহল আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিভিন্ন সময় অপপ্রচার চালাচ্ছে।