ঈদুল আজহার ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত হয়ে উঠেছে শেরপুরের গারো পাহাড়। ঈদের প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে পর্যটকের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। পর্যটকরা বলছেন, আগের তুলনায় ভিন্নতা এসেছে গারো পাহাড়ে। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার কিছুটা হলেও ব্যবসার ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে উঠবে।
জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গজনী অবকাশ ও নালিতাবাড়ীতে বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে মধুটিলা ইকোপার্কগুলো যেন এক অচেনা রুপ নিয়েছে। কোলাহল মুক্ত হওয়ায় ঈদের প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিনে ভিড় বেড়েছে কয়েকগুণ।
ঈদের ছুটিতে প্রকৃতিপ্রেমী দর্শণার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে শেরপুরের গারো পাহাড়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। পরিবার-পরিজন নিয়ে নৈসর্গের এ প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে ছুটে এসেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ।
GARO-PHAR1জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ডিগ্রীর চর থেকে ঘুরতে আসা সানজিদা আক্তার দিয়া বলেন, ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে পাহাড়ে ঘুরতে এসেছি। এর আগেও বেশ কয়েকবার গজনীতে আসা হয়েছিল। তবে এবার আমার বাবারবাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে একসঙ্গে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। গারো পাহাড়ের প্রকৃতিক রূপ প্রতিবারের মতো এবারও মুগ্ধ করেছে।
গজনীর লেকের পাড়ে বসে বন্ধুদের সঙ্গে গিটার বাজিয়ে গান করছেন শাহরিয়ার আলম। এসময় কথা হলে তিনি বলেন, আমি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। ঢাকা থেকে আমার পাঁচজন বন্ধুবান্ধব এসেছে। বন্ধুদের নিয়ে তাই গজনীতে এলাম। আরেকটু পর মধুটিলায় যাবো। শাহরিয়ারের বন্ধু তূর্য বললেন, বন্ধুরা মিলে ঈদের ছুটি কাটাতে শেরপুর এসেছি। যান্ত্রিক শহরের কোলাহল ছেড়ে এই শান্ত পরিবেশে এসে গান বাজনা হবে না তা কি কখনো হয়? তাই আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে এই শান্ত পরিবেশে গলা ছেড়ে গান করছি। বেশ ভালো লাগছে। এমন প্রকৃতিক সৌন্দর্য্য আমি আগে কোথাও পায়নি। সব মিলিয়ে দারুণ লাগছে।
শেরপুর শহর থেকে মধুটিলায় এসেছেন নাজমুন নাহার মীম। তিনি বলেন, আমার কাজিনের সাথে পাহাড়ে এসেছি। খুব চমৎকার লাগছে। আজ সারাদিন ঘুরবো।
ছোট শিশুরা এসেছে স্বজনদের সাথে। তারাও আনন্দের সাথে কাটিয়েছে সারাটাদিন।
GARO PHARশেরপুর পৌর শহরের আবু রাশেদ তার ছেলে মেয়েদের সাথে নিয়ে এসেছেন গজনীতে। ১০ বছর বয়সী ছেলে আবু মিহাত বলেন, ড্রাগন, জিরাফ, ঝুলন্ত সেতু ও চিড়িয়াখানা, ট্রেন গাড়ি, টাওয়ার, ভাল্লুক দেখেছি। খুবই ভালো লেগেছে।
গারো পাহাড় ছাড়াও শেরপুর শহরের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র “শেরপুর অর্কিডে” ভিড় ভেড়েছে। অনেকেই পরিবার পরিজন ও প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে চলে আসছে শেরপুর অর্কিডে।
এদিকে ব্যবসায়ী বলছেন, করোনায় দুই বছর পর্যটন ব্যবসায় ধস নামলেও এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সেই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে উঠবে।
চিড়িয়াখানার ইজারাদার ফরিদ মিয়া বলেন, করোনাকালে আমার ব্যাপক লোকসান গুনতে হয়েছে। তবে এবার ঈদে আশা করছি ব্যবসা কিছুটা হবে। ইনশাআল্লাহ।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গারো পাহাড়ে আগত দর্শনার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করতে পারে এজন্য পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে, পাশাপাশি গজনী অবকাশের বিভিন্ন পয়েন্ট লাগানো হয়েছে ৩২টি সিসি ক্যামেরা।