শাকিল মুরাদ: শুক্রবার খ্রীষ্টযোগের (মূলপ্রার্থনা) মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর বারমারী সাধু লিওর খ্রীষ্টান ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত দুইদিনব্যাপি ফাতেমা রাণীর র্তীথ উৎসব। ‘ত্যাগ, সেবা ও প্রেমের রাণী ফাতেমা রাণী, মা মারিয়া’ এই মূল সুরে ২১তম এ তীর্থ উৎসবে যোগ দিয়েছেন প্রায় ৪০ হাজারের বেশি দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক খ্রীষ্টভক্ত। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় পূণর্মিলন, পাপ স্বীকার এবং বিকাল ৪ টায় রাজশাহী ক্যাথলিক খ্রীষ্ট ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও এর পবিত্র খ্রীষ্টযোগের মধ্য দিয়ে তীর্থ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে রাত ৮টায় আলোক শোভাযাত্রা, আরাধ্য সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান ও রাত ১২ টায় নিশি জাগরণের মধ্যদিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা খ্রীষ্টভক্তরা নিজেদের পাপ মোচনে মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর মিছিলে অংশ গ্রহন করেন। এসময় প্রায় ২ কিলোমিটার পাহাড়ী ক্রুশের পথ অতিক্রম শেষে মা-মারিয়ার প্রতিকৃতির সামনে সমবেত হয়ে ভক্তি শ্রদ্ধা জানিয়ে অকৃপন সাহায্য প্রার্থনা করেন ক্যাথলিক ভক্তরা। শুক্রবার সকাল ৮টায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম ও বেলা ১২টায় মহা খ্রিষ্টযোগের মধ্যদিয়ে দুই দিনব্যাপি তীর্থ উৎসবের সমাপ্তি হবে।
জানা যায়, শেরপুরের ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থানটি পর্তুগালের ফাতেমা নগরের আদলে ও অনুকরনে ১৯৯৮ সালে স্থাপিত হয়। সেই থেকেই ফাতেমা রাণীর করুণা ও দয়া লাভের আশায় বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে তীর্থযাত্রীরা এখানে সমবেত হয় নিজেদের পাপ মোচনের জন্য।
টাঙ্গাইল থেকে আসা তীর্থ যাত্রী এ্যালগার বলেন, আমরা প্রতি বছর মা মারিয়ার আছে এসে মানত করে যাই। আমরা বিশ^াস করি মা মারিয়ার কাছে মানত সব পূরণ হয়। যার কারণে আমরা প্রতি বছর এখানে আছি।
রাজশাহী থেকে আসা তীর্থ যাত্রী এলিনা বলেন, মা মারিয়ার কাছে যা চাওয়া হয় সেটা পাওয়া যায়। এজন্য আমরা মা মারিয়ার কাছে আসি প্রত্যেক বছর এবং প্রার্থনা করি।
ঢাকা থেকে আসা জারুস নামে আরেক তীর্থ যাত্রী বলেন, আমি প্রতি বছর এখানে আসি মা মারিয়ার কাছে যা চেয়েছি আমি তাই পেয়েছি এজন্য এবারো এসেছি মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে।
রাজশাহী ক্যাথলিক খ্রীষ্ট ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, এবারের তীর্থযাত্রায় বিশ্বে মানবতার কল্যাণে বিশেষ করে বাংলাদেশের সকল সমস্যার সমাধানের জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে। সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহনে দিন দিন তীর্থ উৎসব একটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।
শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, তীর্থউৎসবে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসারসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকায় সুন্দরভাবে শেষ হয়েছে তীর্থ উৎসব।