শেরপুরের নালিতাবাড়ীর সোহাগপুর গণহত্যা দিবসে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ভিন্নধর্মী কর্মসূচী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ২৫ জুলাই বুধবার সকালে বিধবাপল্লীর বধ্যভূমির স্মৃতিসৌধে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম নিম ও কৃষ্ণচূড়া ও ভিয়েতনামের নারিকেল গাছ রোপণ করে নালিতাবাড়ী উপজেলায় সাড়ে ৩ হাজার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। পরে তিনি বেঁচে থাকা ২৪ জন বিধবা ও বীরঙ্গনাকে সাথে নিয়ে স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় আওয়ামীলীগ ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর পক্ষ থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল হোসেন মাষ্টার, সাধারন সম্পাদক মো.ফজলুর রহমান, কাঁকরকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ তালুকদার মুকুল শহীদ বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে বিধবাদের সংবর্ধিত করা হয়।
এদিন দুপুরে বেনুপাড়া জামে মসজিদে গণহত্যায় নিহত ১৮৭ জন শহীদ স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) খালেদ বিন নূর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) মো. জাহাঙ্গীর আলম, ওসি একেএম ফসিহুর রহমান প্রমূখ অংশ নেন। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে সোহাগপুর গ্রামের সকল শহীদ পরিবারের বাড়ীতে ভিয়েতনামের নারিকেল গাছ রোপন করে দেওয়া হয়।
পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, সোহাগপুরের শহীদের স্মরণে জেলা পুলিশ নালিতাবাড়ী উপজেলায় সাড়ে ৩ হাজার বৃক্ষরোপণ করবে। আজ স্মৃতিসৌধ ও শহীদ পরিবারের বাড়ীতে বৃক্ষরোপন করার মধ্য দিয়ে কর্মসূচী শুরু হলো। মাননীয় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর অনুপ্রেরনায় আমরা প্রতিটি শহীদ পরিবারের আিঙ্গনায় একটি করে ভিয়েতনামের নারকেল গাছ রোপণ করে দিয়েছি। ৩ বছরের আগেই এসব গাছে নারকেল হবে। এতে প্রতিটি পরিবারে আর্থিক দিক থেকে লাভবান হবে।
উল্লেখ, ১৯৭১ সালের এ দিনে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নালিতাবাড়ীর সোহাগপুর বেনুপাড়া গ্রামে পাকিস্তানী হায়েনার দল নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালান হয়। এসময় গ্রামের ১৮৭ জন নিরীহ পুরুষ মানুষকে নির্মমভাবে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে হায়েনার দল। গ্রামের সকল পুরুষ মানুষকে হত্যা করায় স্বাধীনতার পর এ গ্রামের নাম হয় ‘বিধবাপল্লী’। ১৯৯১ সালে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর চেষ্টায় সোহাগপুরের বিধবাদের আর্থিক সহায়তা ও পুর্ণবাসনের কাজ শুরু হয়। সম্প্রতি বেঁচে থাকা বিধবাদের মধ্যে থেকে ১২ জনকে বীরঙ্গনা উপাধি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তারা সরকারি ভাতা পাচ্ছে। এছাড়া ৩০ জন বিধবাকে পাকা ঘর করে দিচ্ছে সরকার।