শেরপুরে সন্ত্রাস দমন আইন মামলায় ৬ জেএমবি সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দিয়েছে আদালত। আজ দুপুরে শেরপুরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) এম.এ নূর জনাকীর্ণ আদালতে ওই রায় ঘোষণা করেন। দন্ডিতদের মধ্যে শহরের ঢাকলহাটী মহল্লার রাজা মিয়ার ছেলে নাজমুস শাহাদাত রানা (২৮) কে ২০০৮ সালের সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশের ৯ ধারায় ৭ বছর ও ৮ ধারায় ৬ মাসসহ সাড়ে ৭ বছর সশ্রম কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদ- দেওয়া হয়।
এছাড়া মামলার অপর ৫ আসামী শহরের পূর্বশেরীর ফজলুর রহমানের ছেলে মনিরুজ্জামান মানিক ওরফে কাওসার (২৮), নওহাটা মহল্লার মনসুর আলীর ছেলে মারুফ হোসেন রনি (৩১), বাগরাকসা মহল্লার হাজী আতাহার আলীর ছেলে আমির হামজা খলিল (৩২), নালিতাবাড়ীর নাকশী গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে তানভীর (৩২) ও জামালপুরের রানাগঞ্জ গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে সোয়েব (৩৩) কে ওই আইনের ৯ ধারায় ৫ বছর এবং ৮ ধারায় ৬ মাসসহ সাড়ে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদ- ও ১৫ হাজার টাকা অর্থদ- অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদ- দেওয়া হয়। নাজমুস শাহাদাত রানাসহ ৫ আসামীর উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষিত হলেও অপর আসামী আমির হামজা খলিল পলাতক রয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতের কাঠগড়ায় একেবারেই ভাবলেশহীন ছিলেন।
আদালতসূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২২ জানুয়ারি নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য শেরপুর শহরের ঢাকলহাটী মহল্লার রাজা মিয়ার ছেলে নাজমুস শাহাদাত রানার বাসায় অভিযান চালিয়ে রানা ও তার সহযোগী মনিরুজ্জামান মানিক ওরফে কাওসারকে আটক করে পুলিশ। ওইসময় ওই বাসায় তল্লাসী চালিয়ে ১৭টি জিহাদি দাওয়াতপত্র ও বেশ কিছু সিডি-ক্যাসেটসহ নিষিদ্ধ সংগঠনের আলামত উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় শেরপুর সদর থানার তৎকালীন এএসআই সজীব খান বাদী হয়ে নাজমুস শাহাদাত রানা ও কাওসারসহ ৭ জনকে স্বনামে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০/৬০ জনকে আসামী করে ২০০৮ সালের সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশের ৮/৯ ধারায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে আসামীরা বিভিন্ন পর্যায়ে আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে আবুল কালাম আজাদ নামে এক আসামী মৃত্যুবরণ করে। চলতি বছরের ২৩ মে ওই মামলায় ৬ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ১৮ জুন রাষ্ট্র ও আসামী পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে উপস্থিত ৫ আসামীর জামিন বাতিল এবং অপর আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার আদেশ দেওয়া হয়। এদিকে চাঞ্চল্যকর ওই মামলার রায়কে ঘিরে সকাল থেকেই আদালত অঙ্গনে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। আসামীদের বিশেষ নিরাপত্তায় জেলা কারাগার থেকে আদালতে আনাসহ সাজার পর একইভাবে পাঠানো হয় কারাগারে।
এদিকে ওই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের ভারপ্রাপ্ত পিপি এডভোকেট অরুণ কুমার সিংহ রায় সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল মজিদ বাদল ও এডভোকেট এমকে মুরাদুজ্জামান তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করে খুব দ্রুতই উচ্চ আদালতে আপীল দায়ের করবেন বলে দাবি করেছেন।