মহিউদ্দিন সোহেল/ ইমরান হাসান রাব্বী : শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের নবঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে জেলা ছাত্রলীগের একাংশের ও অন্যদিকে নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ বিকেলে শহরের খরমপুরে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে ছাত্রলীগের একাংশের এবং শহরের চকবাজারস্থ জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরে নবঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিলও করে জেলা ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ একাংশ।
ছাত্রলীগের একাংশের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. নাজমুল ইসলাম সম্রাট বলেন, “গত ৫ মে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন আগামী এক বছরের জন্য শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেন। নবঘোষিত কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যথাক্রমে সোয়েব হাসান শাকিল ও মো. রেজাউল করিম রেজাকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সোয়েব হাসানের বিরুদ্ধে চাঁদার দাবিতে একজন কলেজ অধ্যক্ষকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগে সদর থানায় মামলা রয়েছে। অপরদিকে রেজাউল করিম বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সদস্য। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে ঘোষিত কমিটিতে অছাত্র, সন্ত্রাসী ও নেশাগ্রস্তদের স্থান দেওয়া হয়েছে। তাই আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই কমিটি বাতিল করে ছাত্র-জনতার মতামত নিয়ে প্রকৃত আওয়ামী পরিবারের ছাত্রদের দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি দিতে হবে। তা না হলে অবরোধ, অনশন, বিক্ষোভসহ কঠোর কর্মসূচি দিয়ে শেরপুরকে অচল করে দেওয়া হবে।”
অন্যদিকে ছাত্রলীগের নবঘোষিত কমিটিকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়ে চকবাজারস্থ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য মো. খোরশেদুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খন্দকার নজরুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. নাজিমুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল। এ সময় ছাত্রলীগের একাংশের সকল অভিযোগ অস্বীকার করে নেতৃবৃন্দ বলেন, “এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। গঠনতন্ত্র মোতাবেক নিয়ম মেনেই কেন্দ্র থেকে মেধাবীদের নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের একটি সুন্দর কমিটি উপহার দেওয়া হয়েছে। এই কমিটির প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও হুইপ আতিউর রহমানসহ জেলা আওয়ামী লীগের সকল নেতৃবৃন্দের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। যদি অছাত্র এবং ষড়যন্ত্রকারীরা কোনভাবে শেরপুরের স্বাভাবিক পরিস্থিতি নষ্ট করার পায়তারা করে, তবে সাংগঠনিকভাবে ও প্রশাসনিকভাবে তা মোকাবেলা করা হবে।” এসময় আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩ টায় জেলা ছাত্রলীগের নবঘোষিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে শহরে আনন্দ মিছিল করার ঘোষণাও দেন তারা।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সোয়েব হাসান শাকিলকে সভাপতি ও মতিউর রহমান মতিনকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা শাখার কমিটি অনুমোদন দেয়। ওই কমিটি অনুমোদন দেয়ার পর বিক্ষুব্ধ অংশের প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মুখে পরদিনই তা স্থগিত করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলে কেন্দ্রীয় কমিটি। পরে গত ৫মে সভাপতি হিসেবে সোয়েব হাসান শাকিল ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মো. রেজাউল করিম রেজাকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।