সংবাদমাধ্যমে অপতথ্য ও গুজব ঠেকাতে উদ্যোগী হওয়ার কথা জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্সের (অ্যাটকো) সঙ্গে এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা চাই, অপতথ্যকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চাই। আমরা দিন শেষে চাই গুজব বা রিউমারমুক্ত গণমাধ্যম; যেখানে তথ্যের অবাধ প্রবাহ থাকবে এবং সরকার বা অথরিটিকে অবশ্যই প্রশ্ন করা হবে। উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকবে এবং সমালোচনার জায়গা থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম কেবিনেট মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অনেক ক্ষেত্রে সমালোচনা হবে, কিছু কিছু সমালোচনা হবে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে, সেগুলো জেনে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তিনি চান সমালোচনা হোক সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বা সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কাজ নিয়ে যদি কোনো বিচ্যুতি বা ব্যর্থতা থাকে অবশ্যই সমালোচনা হবে এবং সেটা যদি প্রথম পাতায় প্রিন্ট মিডিয়া বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার হেডলাইনে থাকে তাহলে সরকারের সেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা ব্যক্তিরা যে জবাব দেবেন সেই জবাবগুলো যাতে একইভাবে গুরুত্বসহকারে মিডিয়াতে আসে; যেন জনগণ একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে। কারণ গণতন্ত্রে কিন্তু মানুষকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং ইনফর্ম ডিসিশন নিতে হয়।’
অপতথ্য ও গুজব প্রসঙ্গে এ আরাফাত বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে এক ধরনের অপচেষ্টা চলে। গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের যে বিস্তৃতি ঘটেছে, সেখানে কীভাবে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো যায় এবং শৃঙ্খলা আনা যায় সেই চেষ্টা করতে হবে। প্রথমেই সতর্ক থাকতে হবে, আমরা যেমন মিসইনফরমেশনকে নির্মূল করতে চাই, অপতথ্যকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চাই। কিন্তু সেটি করতে গিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সেখানে যেন ওভারস্টেপ না হয়। তবে দেশ, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত, মুক্তিযুদ্ধ এবং ৩০ লাখ শহীদদের নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকতে পারে না। এগুলো দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড।’
তবে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সমালোচনার স্পেস রেখে কীভাবে একসঙ্গে কাজ করা যায় সেই চেষ্টা থাকবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
বৈঠকে অ্যাটকো নেতারা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্প্রসারণ ও উন্নতির জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করলে প্রতিমন্ত্রী এ লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
ডিবিসি টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের মতো ইলেকট্রনিক মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি আলাদা প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক টিভির পরিচালক নাবিদুল হক, বৈশাখী টিভির উপব্যবস্থাপক টিটু আলম মিলন, এনটিভির পরিচালক মো. আশফাক উদ্দিন আহমেদ।