বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার মোটেই মৃত নয়, জীবন্ত ইস্যু। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুকে আওয়ামী লীগ যতই চাপা দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, তা জেগে উঠবেই। তাদের ভোট চুরির কারণেই জনগণের মধ্য থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি উঠেছে।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) ময়মনসিংহে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এক অনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রিন্স।
বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে ময়মনসিংহ উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এবং মহানগর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি হয়।
ময়মনসিংহ মহানগরের নতুন বাজারে হরি কিশোর রায় রোডে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সড়কে বসে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনশনে অংশ নেন। অনশন কর্মসূচি একপর্যায়ে বিশাল সমাবেশে পরিণত হয়।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপির আন্দোলন ও দেশি-বিদেশি চাপে সরকারের মাথা নষ্ট হয়ে বেসামাল আচরণ ও পাগলের প্রলাপ বকছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তলে তলে সমঝোতা হয় না, ষড়যন্ত্র হয়। বিদেশিদের সাথে ‘গিভ অ্যান্ড টেক’ করে আপস করতে গিয়ে তারা ব্যর্থ হয়ে এখন সন্ত্রাসের ভাষায় উসকানিমূলক কথাবার্তা বলছেন।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে জনগণ ক্ষমা করবে না। বেগম খালেদা জিয়াকে এই সরকার ও প্রধানমন্ত্রী বাঁচতে দিতে চায় না। তারা বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে ভয় পায়। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে তারা বেগম জিয়ার সুচিকিৎসার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চায়। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, একদফার আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৮ অক্টোবর ঢাকায় জনসমাবেশ থেকে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষিত হবে। চূড়ান্ত আন্দোলনে যখন যে কর্মসূচি আসবে জীবনবাজি রেখে হলেও তা সফল করতে হবে। এবার দেশ, জনগণ, গণতন্ত্র ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত হবে, ইনশাআল্লাহ।
ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে এবং উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলীর যৌথ সঞ্চালনায় অনশন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন খান, গণফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি এ কে এম রায়হান উদ্দিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. নুরুল হক, পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষে অধ্যাপক ফজলুল হক ভূঁইয়া, অ্যাড. আনোয়ারুল আজিজ টুটুল।
অনশন কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শাহ শহীদ সরোয়ার, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, সাবেক এমপি শাহ নূরুল কবীর শাহীন, বিএনপির বৈদেশিক কমিটির সদস্য ইয়াসের খান চৌধুরী, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, কাজী রানা, শাহ্ শিব্বির আহমেদ বুলু, অ্যাড. এম এ হান্নান খান, শামীম আজাদ, মাহবুবুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আখতারুল আলম ফারুক, ডা. মোাখ্খারুল ইসলাম রানা, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য হাফেজ আজিজুল হক, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. দিদারুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোজাম্মেল হক টুটু, সাধারণ সম্পাদক জোবায়েদ হোসেন শাকিল, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম কামাল, সদস্য সচিব মহিবুল হক টুটুল, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ সাদমান ডুনন, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ রবিন, দক্ষিণ জেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক ফরিদা ইয়াসমিন পারভীন, মহানগর মহিলা দলের আহ্বায়ক খালেদা আতিক, উত্তর জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক হোসনে আরা নীলু, দক্ষিণ জেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক কারি এখলাস উদ্দিন।
পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসলাম উদ্দিন ও কাজিম উদ্দিন অনশনরত নেতাকর্মীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।