শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবের ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া কান্দা গেন্দু সরকারের বাড়ি হতে খলিশাকুড়া গারো বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিঃমিঃ রাস্তাটি কাঁচা। বর্ষাকালে এই রাস্তাটি কাদা জলের কারনে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। এ কারনে এলাকার বয়োবৃদ্ধ, ছাত্র ছাত্রীসহ কৃষক, ব্যাবসায়ী, রোগী এবং গর্ভবতী মায়েদের চলাচলে ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল এই রাস্তাটির সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহন না করায় শুক্রবার ১৮ (আগস্ট) এলাকাবাসী মিলে রাস্তায় ধানের চারা রোপন করে অভিনব কায়দায় এই প্রতিবাদ জানান।
জানা গেছে, উপজেলার জাঙ্গালিয়াকান্দা ও খলিশাকুড়া গ্রামের একাংশ মিলে প্রায় আড়াই হাজার লোকের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। এই গ্রাম থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলা হাসপাতালের দুরত্ব প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার। দুরত্ব বেশি হওয়ায় এ গ্রামের অসুস্থ্য রোগী বা গর্ভবতী মায়েদের দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। কাঁচা রাস্তা হওয়ার কারনে অনেক সময় যানবাহনও পাওয়া যায়না। তাই বেশিরভাগ সময় অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এই রাস্তা দিয়ে ছোট শিশুরা স্কুলে যাওয়ার সময় পরে গিয়ে কাঁদাপানিতে ভিজে অনেক সময় বাড়ি ফিরে যেতে হয়। ফলে পড়াশোনার ক্ষতির পাশাপাশি শারিরীক অসুস্থতাও দেখা দেয় তাদের।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন (৭০) জানান, আমরা গ্রামের মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল, আমরা ধানসহ অন্যান্য পণ্য বাজারে নিলে এই খারাপ রাস্তার কারনে যানবাহনে বেশি পরিবহন খরচ দিতে হয়। তাই আমরা কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।
ওই রাস্তায় চলাচালকারী রাসেল (২২) নামে এক কলেজ ছাত্র বলেন, খারাপ রাস্তার কারনে আমরা এখানে কোন রিকশা বা ভ্যানগাড়ী পাই না। ফলে স্কুলে কলেজে ক্লাশ করতে কিংবা পরীক্ষা দিতে সময়মত পৌঁছাতে পারিনা। গ্রামের অপর বাসিন্দা মনির হোসেন (২৫) বলেন, এই রাস্তাটি এরশাদ সরকারের আমলে করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর কেউ এই রাস্তার সংস্কার কাজ করেনি। আমরা দুখের সাথে বলতে চাই আসন্ন স্মার্ট যুগের এলাকার মানুষ হয়েও আমরা এই রাস্তার জন্য দীর্ঘদিন যাবত ভুগছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এলাকার জন প্রতিনিধিদের কাছে বার বার এই রাস্তার জন্য আবেদন করেও এখন পর্যন্ত আমরা এর কোন সমাধান পাইনি। তাই আমাদের এই কষ্টের প্রতিবাদ স্বরুপ আমরা এলাকাবাসী মিলে এই রাস্তায় ধানের চারা রোপন করেছি, যাতে সরকার এটি দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ওই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব তহবিল কিংবা এলজিএসপির কোন প্রকল্পও নেই। এছাড়া রাস্তাটি পাকাকরনের জন্য সরকারীভাবে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন সুরাহা পাওয়া যায়নি।