শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে পরিকল্পিতভাবে সংঘাত ও দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মক্তবের কোরআন শরীফ পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মপ্রাণ মানুষকে উস্কে দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মামলায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পৃথক দুই মামলার পর শুক্রবার (২৮ জুলাই) গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার রূপনারায়নকুড়া ইউনিয়নের গাছগড়া উত্তরপাড়া তিন রাস্তার মোড়ে গাছগড়া ক্বেরাতিয়া মাদরাসায় এই কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- কোরআন পোড়ানোর মামলায় বিএনপি নেতা জাহিদুল হক (৩৪), বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মামলায় তারাগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) ও সাবেক শিবির নেতা আব্দুল্লাহ বাদশা (৫০), রূপনারায়নকুড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আজিজুর রহমান (৫০), শহর জামায়াতের আমীর আইয়ুব আলী (৪৫), বিএনপি নেতা সোহেল রানা (৩৯), ছাত্রদল কর্মী রেজাউল করিম (২৬) ও মাসুম পারভেজ (২১)।
সূত্র জানায়, রুপনারায়নকুড়া ইউনিয়নের গাছগড়া ক্বেরাতিয়া মাদরাসার মক্তবে সপ্তাহের শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন সকালে শুধুমাত্র কোরআন শিক্ষা দেওয়া হয়। এছাড়াও ওই মক্তবে স্থানীয় মুসল্লীরা নিজ উদ্যোগে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করেন। ফলে মক্তবটির দরজা সিটকিনি দিয়ে লাগানো থাকে। বৃহস্পতিবার ভোররাতে অপরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির লক্ষ্যে কতিপয় দুর্বৃত্ত মক্তবের রেকে রেখে দেওয়া অন্তত ৩০টি কোরআন শরীফ ও বেশকিছু কায়দা-ছিপাড়া পুড়িয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, গান পাউডার বা দাহ্য কোন পদার্থ দিয়ে ওইসব পোড়ানো হয়। এর কিছুক্ষণ পর স্থানীয় এক মুসল্লী ফজরের নামায আদায় করতে গেলে মেঝেতে কোরআন শরীফগুলো পুড়তে দেখেন। পরে খবর দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। একপর্যায়ে গণমাধ্যমকর্মী ও প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে যান।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ভোরেই কোরআন পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় অতিউৎসাহী কিছু ব্যক্তি শ্লোগান দেন এবং বিচার দাবী করে সংক্ষিপ্ত মিছিল করেন। কেউ কেউ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। তবে পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে প্রাথমিক তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে বিভিন্নভাবে সংশ্লিষ্টার অভিযোগে মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক ধারায় দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
মামলা দুটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম ও এসআই সাফায়েত গ্রেফতারপূর্বক আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।