জীবন সংগ্রাম দিয়ে যিনি নিজেকে একের পর এক ভেঙেছেন-গড়েছেন, তিনি কবি নির্মলেন্দু গুণ। বাংলা ভাষার এই কবি জনপ্রিয়তায় নিজেকে উত্তীর্ণ করেছেন। ‘হুলিয়া’, ‘কীভাবে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের হলো’, ‘প্রেমাংসুর রক্ত চাই’ কবিতা পাঠকের হৃদয় গভীরে বাজতে থাকে প্রতিনিয়ত। সেই নির্মলেন্দু গুণের জন্মস্থান ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোণা জেলায়।
যার কবিতা বাঙালি ও বাংলাদেশের অনবদ্য দৃশ্যপট। যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নানাভাবে রাঙিয়েছেন কবিতায়। তার ওপর হুলিয়াজারির পর তিনি পালিয়ে থেকেও কবিতা থেকে বিচ্ছিন্ন হননি।
গত ২১ জুন ছিলো এই কবির ৭৯তম জন্মদিন। তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের পাঠচক্র বীক্ষণ ২০৫০তম আসরের আয়োজন করা হয় ‘গুণের গুণকীর্তন’ শিরোনামে। শুক্রবার (২৩ জুন) শিল্পাচার্য জয়নুল উদ্যানের সাহিত্য সংসদ আঙ্গিনায় আয়োজিত এই গুণকীর্ত্তনে ছিল আলোচনা, কবিতাপাঠ ও গান।
এতে আলোচক হিসেবে ছিলেন কবি নেহাল হাফিজ, সমাজসেবক ও বাচিকশিল্পী বাকী বিল্লাহ, কবি তানভীর জাহান চৌধুরী, কবি এনামুল হক পলাশ, ভাস্কর অখিল পাল, সমাজকর্মী ও রাজনীতিক আসাদুজ্জামান রুমেল, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম মামুন। বীক্ষণের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন কবি শামসুল ফয়েজ।
সমাজকর্মী ও রাজনীতিক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, ময়মনসিংহ শিল্প ও সংস্কৃতির আঁতুরঘর। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, আবুল মনসুর আহমদ, যতীন সরকার, উকিল মুন্সি, বারী সিদ্দিকী, হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবাল, মুশাররফ করিম, গোলাম সামদানী কোরায়শী, শৈলজারঞ্জনসহ অসংখ্য গুণী মুখ সারাদেশের সৌন্দর্য্য। তাদের মধ্যে কবি নির্মলেন্দু গুণ অন্যতম কবিমানস।
সমাজসেবক ও বাচিকশিল্পী বাকী বিল্লাহ বলেন, নির্মলেন্দু গুণের কবিতা জনতার হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারে সহজেই। তিনি তার কবিতা নির্মাণ করেন নির্মল ও সহজ শব্দে।
অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম মামুন বলেন, ‘স্বাধীনতা শব্দটি কী করে আমাদের হলো’ পাঠ করতেই মনে হয় যেন সেই রেসকোর্স ময়দানে আমিও উপস্থিত। ঘাসে ঘাসে দোল খায় আমার সকল স্পন্দন।
বীক্ষণ আসর ২০৫০তম আসরের সভাপতি কবি শামসুল ফয়েজ স্মৃতিচারণ করেন তার কাব্যবন্ধু কবি নির্মলেন্দু গুণকে নিয়ে এবং সর্বশেষে সঙ্গীতশিল্পী খায়রুল ইসলাম হীরকের হাওয়ার গাড়ি গান দিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।