শেরপুরের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তলদেশের তিতাস গ্যাসের সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জেলায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে লাইনটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। ঈদের দিনে গ্যাস সংযোগ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জেলার কয়েক হাজার গ্রাহক। এদিকে সন্ধ্যার মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে, এমটাই প্রত্যাশা তিতাস কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ব্রীজের গরুহাটি এলাকায় প্রায় তিন মাস আগে নদী খননের কাজ করে বিআইডব্লিউটিএ। খনন কাজের সময় বিস্তীর্ণ এলাকায় বালু রাখা হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে জমিয়ে রাখা বালুর প্রায় ১৫ ফুট নিচে তিতাস গ্যাসের সঞ্চালন লাইনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘটে। খবর পেয়ে জামালপুর থেকে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ফলে জেলাজুড়ে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঈদের দিন গ্যাস সংযোগ না থাকায় রান্না করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় শেরপুরবাসীর। তাই বিকল্প লাইন চালুর দাবি তাদের।
কথা হয় শেরপুর পৌর শহরের নারায়ণপুর মহল্লার বেসরকারি চাকুরীজীবি মারিয়া সুলতানার সাথে। তিনি বলেন, আমার ননদ, বোন ও তাদের বাচ্চারা বেড়াতে এসেছে। কিন্তু গত রাত থেকেই তিতাসের গ্যাস সংযোগ বন্ধ। হুটহাট এভাবে সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন আমরা রান্নাবান্না করতে পারছি না। গ্যাস নেই, বিকল্প ব্যবস্থাও বাসায় নেই, এখন কিভাবে রান্না করবো। নিজেরাই কি খাবো আর মেহমানদের জন্যই কিভাবে রান্না করে খাওয়াবো। চিন্তায় আছি।
বটতলা মহল্লার গৃহিণী উম্মে কুলসুম বলেন, ময়মনসিংহ হতে আমার নাতিপুতিসহ ৬ জন বেড়াতে এসেছে ঈদে। আজ ঈদের দিনে বাসায় রান্নার আমার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। সিলিন্ডারের দোকানও বন্ধ আজ। কি একটা ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি, বলে বুঝানো যাবে না। খুব টেনশনে পড়ে গেছি।
বৌ বাজারের আরেক গৃহিনী ফিরোজা খানম বলেন, ছেলেমেয়েরা ঈদের ছুটিতে চট্রগ্রাম থেকে এসেছে। নাশতা পর্যন্ত রান্না করতে পারিনি। সকালে সিলিন্ডারের দোকান খুজলাম, সব দোকান আজ বন্ধ। নিরুপায় হয়ে এখন বাচ্চাদের নিয়ে শ্রীবরদীতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
মানবাধিকার কর্মী আলমগীর আল আমিন বলেন, একটা জেলাজুড়ে তিতাসের গ্যাস সংযোগ বন্ধ।ঈদ উৎসবের দিনে তিতাসের গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় সত্যিই এক ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা। আজ হোটেল রেস্তোরাঁও বন্ধ এখানে। বিশেষ করে যাদের বাসায় সিলিন্ডার গ্যাস বা লাকড়ির রান্নার ব্যবস্থা নেই, তাদের ভোগান্তি বহুগুণে বেড়ে গেছে। তাই এমন পরিস্থিতি এড়াতে তিতাসের উচিৎ বিকল্প ব্যবস্থা রাখা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ তিতাসের ম্যানেজার (অপারেশন) প্রকৌশলী হিলটন পাল বলেন, শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে গ্যাসের লাইন পুনরায় চালু করতে পারবো বলে আমরা আশা করছি। আমাদের সর্ববোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।