গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে বেশ দাপট দেখিয়েই রাউন্ড অব সিক্সটিনে পা রেখেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। ওইদিকে ব্রাজিল হেরেছিল নিজেদের শেষ ম্যাচে। তাতে নকআউটের লড়াই জমজমাট হয়ে উঠবে বলেই ধারণা ছিল সবার। কিন্তু ম্যাচের শুরুতেই সাম্বার ছন্দে কোরিয়ানদের হারিয়ে দেয় তিতের শিষ্যরা।
ঘড়ির কাঁটায় ম্যাচের সবে সাত মিনিট। তখনই শুরু হলো ব্রাজিলের গোল উৎসব। থামলো ঠিক ২৯ মিনিট পর। এর মাঝেই জয়-পরাজয়ের চিত্রটা একরকম পরিষ্কার হয়ে গেল। লেখা হলো নতুন কিছু পরিসংখ্যান। নেইমার-রিচার্লিসনরা লিখলেন নতুন ইতিহাস।
দোহায় স্টেডিয়াম ৯৭৪- এ সোমবার রাতে প্রথমার্ধের ওই জাদুকরী ফুটবলে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে ব্রাজিল। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোলগুলো করেন ভিনিসিউস জুনিয়র, নেইমার, রিচার্লিসন ও লুকাস পাকুয়েতা।
এই ম্যাচ দিয়েই ২০২২ সালে সব মিলিয়ে ব্রাজিলের হয়ে ১০ গোল করলেন রিচার্লিসন। যা এই বছরে দেশের হয়ে অন্য যেকোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে অন্তত চারটি বেশি। এই ম্যাচে ২৯ মিনিটের মধ্যে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল; বিশ্বকাপে এই প্রথম তারা এত কম সময়ের মধ্যে তিন গোল করলো।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো ম্যাচের প্রথমার্ধে ৪ গোল করলো ব্রাজিল। সবশেষ এমন কীর্তি দেখা গিয়েছিল ৬৮ বছর আগে ১৯৫৪ বিশ্বকাপে। সেবার মেক্সিকোর বিপক্ষে প্রথমার্ধেই চার গোল দিয়েছিল সেলেসাওরা।
এই ম্যাচে গোল করার মধ্যে দিয়ে তৃতীয় ব্রাজিলিয়ান হিসেবে অন্তত তিনটি বিশ্বকাপে গোল করলেন নেইমার। এই তালিকায় সবার উপরে আছেন কিংবদন্তি পেলে। তিনি ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালে টানা চার আসরে গোল করেছিলেন। এরপর আছেন ‘ফেনোমেনন’ খ্যাত রোনালদো। তিনি টান গোল করেছিলেন ১৯৯৮, ২০০২ ও ২০০৬ সালের আসরে।
খেলোয়াড়দের এমন সব রেকর্ডের মাঝে বাদ যাননি কোচ তিতেও। তিনিও গড়েছেন অন্যরকম এক রেকর্ড। এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিল তাদের স্কোয়াডের ২৬ খেলোয়াড়ের সবাইকে খেলিয়েছে (তিন গোলরক্ষকসহ)। বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো এক আসরে দলের ২৬ খেলোয়াড়কে খেলানোর ঘটনা এটাই প্রথম।
এমন রেকর্ডের দিনে ম্যাচশেষে ব্রাজিলের জয়ের ব্যবধানও দেখার মতো। স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ হওয়া শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছে ব্রাজিল। এই জয়ে সেলেসাওরা নিশ্চিত করেছে কোয়ার্টার ফাইনাল। আগামী ৯ ডিসেম্বর এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে তারা।