যোগাযোগ, শিক্ষা, চিকিৎসা ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ শেরপুর জেলার সার্বিক উন্নয়নে ৮ দফার দাবিতে মানববন্ধন করেছে শেরপুর জেলা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ।
রোববার (৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে শেরপুর জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নাগরিকরা এতে অংশ নেন।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের দাবিগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখলেই বোঝা যায় যে শেরপুর জেলায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। শেরপুর জেলার পরিচয় দিলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়, জানতে চায় এটি কোন জেলা।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় একমাত্র শেরপুর জেলা বঞ্চিত। আওয়ামী লীগ সরকারকে বারবার শেরপুর জেলার জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলেও শেরপুরের কোনো উন্নয়ন সাধন হয়নি।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, কী অন্যায় করেছিল শেরপুরের জনগণ। তাদের কেন উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে সড়কপথে শেরপুর জেলা সফর করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনি একদিন সরজমিনে পর্যবেক্ষণ করুন। আপনার উন্নয়নের সামান্যতম ছিটেফোটাও শেরপুরে পড়েছে কি না, দেখুন। আগামীতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি এবং শেরপুরে জনসভার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর শেরপুর জেলার উন্নয়নে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
মানববন্ধনে সংগঠনের যুগ্ম সমন্বয়কারী হাফিজুল করিম বলেন, দ্রুত শেরপুর জেলার উন্নয়নে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন আব্দুল্লাহ আল মামুন, আক্তার হোসেন, ফরিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হৃদয় ও ঢাকা কলেজের ছাত্র সোহান প্রমুখ।
শেরপুর জেলা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১) ঢাকা থেকে শেরপুর যাতায়াতের জন্য ময়মনসিংহ হয়ে শেরপুরের নকলা উপজেলার মধ্য দিয়ে শেরপুর সদর পর্যন্ত রেল সড়ক নির্মাণ। যা পরবর্তীতে শ্রীবরদী বকশীগঞ্জ ও রাজিবপুর রৌমারী পর্যন্ত প্রশস্তকরণ।
২) আধুনিক উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি চিকিৎসার শাস্ত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন।
৩) শেরপুর যেহেতু কৃষি সমৃদ্ধ এলাকা তাই এখানে কৃষি, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার সমন্বয়ে একটি আধুনিক উচ্চতর বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন।
৪) শহরের নাগরিকদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার লক্ষ্যে শেরপুর পৌরসভার পাশাপাশি নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নামে আলাদা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে এবং পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রদানের মাধ্যমে আধুনিক শহরে উন্নীতকরণ।
৫) ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণকে লক্ষ্য রেখে সরকার সারাদেশে ১০০টি আইটি পার্ক স্থাপন করছে। শেরপুর জেলায় কৃষি উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার ও সীমান্ত রক্ষায় প্রযুক্তির উন্নয়নে একটি আইটি পার্ক স্থাপন।
৬) ১৯৯৬ সালে নাকোগাঁও স্থলবন্দর চালু হলেও এখানে যাতায়াতের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। আমাদের দাবি নাকোগাঁও স্থল বন্দরকে আধুনিক উন্নত স্থলবন্দরে রূপান্তর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
৭) শ্রীবরদী, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলাকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা।
৮) জেলার দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা দীর্ঘদিন শেরপুরের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে জনগণকে ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।
সুত্র : জাগো নিউজ ২৪