শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌরশহরের তারাগঞ্জ দক্ষিণ বাজার শাহী কবরস্থান এলাকার মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক ও মোটরসাইকেল মিস্ত্রী শামিম মিয়া (৩৫) নিখোঁজ হয়েছেন। একটি পুরনো মোটরসাইকেল ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে বিবাদ-মিমাংসা ও পরবর্তীতে হুমকীর পরপরই বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে বাড়ি ফেরার পথে তিনি নিখোঁজ হন। শামিমকে না পেয়ে তার পিতা আব্দুর রাজ্জাক শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সকালে নালিতাবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি একটি পুরনো ডিসকভার মোটরসাইকেল শহরের উত্তর বাজারের মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিত স্বপন মিয়ার কাছ থেকে কেনেন শহরের গোবিন্দনগর মহল্লার শরফরাজ নামে এক ব্যক্তি। মধ্যস্থতাকারী শরফরাজের জেঠাতো ছোট ভাই সুইট মোটরবাইকটির ইঞ্জিনের অবস্থা দেখতে দক্ষিণ বাজার শাহী কবরস্থান সংলগ্ন মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক শামিমের শরণাপন্ন হন। এসময় শামীম ওই বাইকের ইঞ্জিন খোলা হয়েছে জানালে এ নিয়ে দুই গ্যারেজ মালিকের মনমালিন্য হয়।
বৃহস্পতিবার গ্যারেজ মালিক স্বপন প্রায় ২০-৩০ জন যুবক নিয়ে শামিমের গ্যারেজে গিয়ে এর কৈফিয়ত চান। পরে স্বপনের বিয়াই নুরুল আমীন তাৎক্ষণিক উভয়ের মাঝে আপোষ করে দেন। শামীমের গ্যারেজে থাকা সহকারী ও তারই শ্যালকসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত প্রায় সাড়ে নয়টার দিকে ফেরার পথে স্বপন শামিমকে হুমকি দিয়ে যান। প্রায় সাড়ে দশটার দিকে শামিম বাড়ি যাওয়ার কথা বলে গ্যারেজ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়নি।
এদিকে, বাড়ি ফিরে শ্যালক রানা শামিমের খোঁজ নিতে গেলে এখনো বাড়ি ফিরেনি বলে জানায় তার বোন হাসি। এসময় শামিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে (০১৯৪৮-৪২৩৫১৭) বারবার কল করা হলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর শুক্রবার সকালেও শামিমকে না পেয়ে তার পিতা আব্দুর রাজ্জাক নালিতাবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শামিমের ববহৃত নাম্বারটি রাত বারোটার দিকে বন্ধ অবস্থায় সবশেষ লোকেশন শাহী কবরস্থানে পশ্চিমে নির্জন মাঠ-ডোবা নিশ্চিত করে। এসময় পুলিশ ওইসব স্থানে তল্লাশি চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
গ্যারেজ মালিক স্বপন জানান, মনমালিন্যের বিষয় রাতেই মিমাংসা হয়ে গেছে। তিনি শামিমকে কোন হুমকী দেননি। অন্য কোন পক্ষ হয়তো এ সুযোগ নিয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি। তবে শামিম নিখোঁজের সাথে স্বপনের মনমালিন্যের যোগসূত্র আদৌ আছে কি না, পেছনে অন্য কোন ঘটনা তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, এ ঘটনায় পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সম্ভাব্য সন্দেহভাজন একজনকে থানায় ডাকা হয়েছে। এছাড়া পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ গ্রহন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।