প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে তার নানির বাড়িতে লুকিয়ে রেখে অপহরণ নাটক সাজাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন স্ত্রী। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে।
বুধবার (১০ আগস্ট) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা গ্রামে অপহরণ নাটকের ঘটনা ঘটে।
গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বিষয়টা জানিয়েছেন।
আটকরা হলেন-ফারজানা বেগম। তিনি দুর্গাহাটা গ্রামের ইরাক প্রবাসী উকিল আহম্মেদের স্ত্রী। আরেকজন ফারজানার মা নাজমা বেগম।
ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, বুধবার বিকেলে ফারজানা বেগম গাবতলী থানায় অভিযোগ করেন যে, সার্ক মডেল স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া তার মেয়ে মঞ্জিলাকে স্কুল ছুটির পর কে বা কারা অপহরণ করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। এমন অভিযোগ পেয়ে গাবতলী থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। এরপর স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ দেখতে পান মঞ্জিলা স্কুল থেকে বের হয়ে বাড়ির দিকে না গিয়ে উল্টোদিকে যাচ্ছে এবং বোরকা পরিহিত এক নারী তার পিছনে যাচ্ছেন। এরপর যে অটোরিকশায় মঞ্জিলা এবং বোরকা পরিহিত নারী যায় সেই অটোরিকশা শনাক্ত করে পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়ি বাজারে মঞ্জিলার নানি নাজমা বেগম অপেক্ষা করছিলেন। সেখান থেকে মঞ্জিলার মা ফারজানা তার মেয়েকে শেরপুর থানার উলিপুর গ্রামে নানি নাজমার বোনের বাড়িতে রেখে আসেন। এরপর গাবতলী থানায় অভিযোগ করেন যে, তার মেয়েকে অপহরণ করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে। মঞ্জিলার মা ফারজানার কথাবার্তায় পুলিশের সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদে ফারজানা তার মেয়েকে নিয়ে অপহরণ নাটকের সাজানো কাহিনী খুলে বলেন।
ফারজানা পুলিশকে জানান, তার স্বামী উকিল আহমেদ দীর্ঘদিন ইরাক প্রবাসী। উকিল আহমেদ প্রবাস থেকে বিভিন্ন সময় টাকা পাঠাতো। সেই টাকার মধ্যে আগে দেড় লাখ টাকা হারিয়ে গেছে বলে স্বামীকে জানায়। এছাড়াও আরও ৩ লাখ টাকা ফারজানা আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে শিশু মেয়েকে শিখিয়ে দিয়ে অপহরণের নাটক সাজান।
ফারজানা পুলিশকে আরও জানান, তার স্বামী উকিল আহমেদ আগামী দুই এক দিনের মধ্যে ইরাক থেকে বাংলাদেশে আসবেন। স্বামী আসলে বলবেন যে, মেয়েকে অপহরণ করেছিল, ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, পুলিশের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসে। বর্তমানে ফারজানা ও ফারজানার মা নাজমা বেগম ও শিশু মেয়ে মঞ্জিলা গাবতলী মডেল থানা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার হেফাজতে আছেন।