শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ডিভোর্স দিয়ে চলে যাওয়া বিদেশ ফেরত সাবেক স্ত্রীর সাথে পরকীয়া আছে এমন সন্দেহে দুই সন্তানের জনক প্রতিবেশি যুবক আবু সাইদকে (২৬) কুপিয়ে হত্যা করেছে চার সন্তানের জনক মাহফুজ (৪৫) নামে এক দিনমজুর। বুধবার (৬ জুলাই) দিবাগত রাত বারোটার দিকে উপজেলার পশ্চিম গেরাপচা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, উপজেলার পশ্চিম গেরাপচা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে পেশায় বিদ্যুৎ মিস্ত্রী আবু সাইদ ও ইমান আলীর ছেলে পেশায় দিনমজুর মাহফুজ পরস্পর প্রতিবেশি। প্রায় তিন বছর আগে মাহফুজের স্ত্রী চার সন্তানের জননী মিনারা ওমানে যান। দুই বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরেন। এরপর স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় মিনারা প্রায় বছর খানেক আগে স্বামী মাহফুজকে তালাক দিয়ে পিতার বাড়ি দিনাজপুরে চলে যান। স্ত্রী চলে যাওয়ায় মাহফুজ প্রতিবেশি আবু সাইদকে মনে মনে সন্দেহ করতে থাকে। ফলে প্রতিশোধের নেশায় সাইদের সাথে সম্পর্ক আরো গভীর করে তুলে। বুধবার রাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সাইদকে মাছ ধরতে নিয়ে মাঠে যায় মাহফুজ। রাত এগারোটার পর ফিরে একসাথে স্থানীয় এক দোকানে দু’জনে একসাথে চা ও ধূমপান করে। কিছুক্ষণ পর সাইদ দোলোয়ার হোসেন বাচ্চুসহ দু-তিন জনের সাথে রাস্তায় দাড়িয়ে কথা বলছিল। দূর থেকে মাহফুজ সাইদকে ডেকে নিয়ে আকস্মিক ঘারের পেছনে সজোরে দা দিয়ে পরপর দুটি কোপ দেয়। এতে সাইদের ঘারের পেছনের অংশ পুরোপুরি কেটে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় সাইদের চিৎকার শোনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণাকরেন।
এদিকে, ঘটনার পর অভিযুক্ত মাহফুজ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে রাত সাড়ে বারোটার দিকে শহরের নয়ানিকান্দা এলাকায় নালিতাবাড়ী-ঢাকাসড়ক থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে রাস্তার পাশের ঝোপ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, গ্রেফতার মাহফুজ হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।