রোকন রাইয়ান একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ লেখক। সৃষ্টিশীলতায় যিনি অন্য অনেককে ছাড়িয়েছেন ইতোমধ্যেই। তার প্রকাশিত কিশোর উপন্যাস বইপোকাদের দল (২০১৪) ও বন্ধু পরিবহন (২০১৫) এর বড় প্রমাণ।
বই দুটি দিয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া রোকন রাইয়ান এবার মেলায় এনেছেন উপন্যাস ‘সুখিয়া’। শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে বেড়ে উঠা এ লেখক এবারের বইটি নিয়েও সমান আশাবাদী। বইটি প্রকাশ করছে সাহস পাবলিকেশন্স। মেলায় পাওয়া যাবে ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে। বইটি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন নাইম ইসলাম
কেমন আছেন?
ভালো আছি, এই সময়টাতো বইপ্রেমীদের ভালো থাকার সময়। ভালোবাসা পাওয়ার সময়।
এবারের বইমেলায় নতুন কোনো বই আসছে কি?
হ্যাঁ, একটি বই আসছে। সুখিয়া। প্রকাশ করছে সাহস পাবলিকেশন্স। স্টল নং ৩৬৯। বইটি প্রকাশের জন্য কৃতজ্ঞতা সাহসের প্রকাশক লেখক ও ঔপন্যানিসক সাহস রতন ভাইয়ের প্রতি। তিনি তরুণদের জন্য কাজ করেন এবং তরুণদের উঠিয়ে আনতে পরিশ্রম করে থাকেন।
সুখিয়ার প্রেক্ষাপট কী?
সুখিয়া একটি উপন্যাস। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত জাতি হিসেবে পরিচিত রোহিঙ্গাদের করুন জীবনআলেখ্য উপজিব্য করে লেখা। উদ্বাস্তু জীবনের সঙ্কট এবং এই সঙ্কটের সঙ্গে মানুষ কী পরিমাণ বর্ণনাতীত কষ্টে জীবন পার করে তার দেখা পাওয়া যাবে সুখিয়ায়।
রোহিঙ্গা প্রেক্ষাপটের উপন্যাসের নাম সুখিয়া কেন? ইতিহাস তো নিপিড়িতের।
এটি একটি রহস্য। এই রহস্য উদ্ঘাটন করতে পাঠককে যেতে হবে একদম শেষ পৃষ্ঠায়। তার আগে এই নামের মাহাত্ম পাওয়া যাবে না। আর রহস্যটা এখানে অউন্মোচিতই থাকুক। বলে ফেলে পাঠক মজাটা পাবে না।
গতবারের বইমেলা আর এবারের বইমেলা– কোনো পরিবর্তন কি লক্ষ্য করেছেন?
এবারের বইমেলার স্টলবিন্যাসে বেশ পরিবর্তন আনা হয়েছে। নির্দিষ্ট স্টল খুঁজে পেতে কষ্ট হচ্ছে পাঠকের। তবে এবারের মেলার ভালো দিক বেশ খোলামেলা যায়গা আর পরিচ্ছন্ন। আগে ধুলোর কারণে মেলায় বেশিক্ষণ থাকা যেতো না এবার মাটিতে ইট বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। যে কারণে ধুলোর চিহ্নও পাওয়া যাচ্ছে না।
আরেকটি বিষয় এবারের মেলায় নিরাপত্তা বেশ জোরদারভাবে নেয়া হয়েছে। সবরকম ঝুঁকিমুক্ত মনে হয়েছে। বিষয়টি ভালো।
বাংলা একাডেমির মেলা ব্যবস্থাপনায় আপনি কি সন্তুষ্ট?
হ্যা, তবে মেলাটা গত তিনবছর যাবত একটু দ্বিখণ্ডিত। কেউ সোহরাওয়ার্দিতে ঢুকলে আর একাডেমিতে যেতে চায় না। দুই গেট পাড় হওয়ার ঝক্কি নেয়াটা সবার ভালো লাগে না। এ জন্য এক ছাতার ভেতর পুরো মেলাকে আনা গেলেই ভালো।
লেখালেখিতে কীভাবে এলেন?
পড়াশোনার বাইরে গল্প উপন্যাসের বই পড়তে ভালো লাগত। সেই ভালো লাগা থেকে একসময় মনে হয়েছিল আমিও এভাবে লিখতে পারবো। সেই থেকেই লেখালেখিতে।
লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
মানুষকে ভালো কিছু দেয়ার চেষ্টার উপর বড় কোনো পরিকল্পনা নেই। আমি মস্ত কিছু হয়ে যাবো এমন কল্পনা মাথায় কখনো স্থান পায়নি। কেবল ভালো লাগে এটা ভাবতে, আদর্শিক জায়গায় থেকে মানুষকে কল্যাণকর কিছু পৌঁছানো, যা থেকে পাঠক উপকৃত হন।
পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার আছে?
জীবন সাজানোর সবচেয়ে বড় মাধ্যম বই। সুতরাং পড়তেই হবে পড়তেই হবে। পড়তে পারার ভেতর যে মজা পৃথিবীর আর কোথাও এটি পাওয়া যাবে না। বই ও পাঠ দিয়ে আমরা সমাজের সব অন্যায় আর কলুষিত বস্তুকে সরিয়ে দিতে পারি।তাই বই নিজে পড়তে হবে অন্যকে পড়াতে হবে।