থেমে থেমে বৃষ্টি আর হঠাৎ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী উপজেলার ১১ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকাল থেকে মহারশী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার সদর বাজার, উপজেলা পরিষদ চত্বর ও আশপাশের এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
ঝিনাইগাতী বাজারের ব্যবসায়ী আকাশ মিয়া জানান, পাহাড় থেকে ঢল আসলেই বাজারে পানি ওঠে। এর একটা স্থায়ী সমাধান করা জরুরি। তা না হলে এভাবে আমাদের মালামালের ক্ষতি হতেই থাকবে। বাজারের সোহেল ডিজিটাল স্টুডিও’র প্রেপাইটর সোহেল রানা বলেন, নদীর যে অংশ দিয়ে বাজারের দিকে পানি প্রবেশ করে সেই জায়গায় একটা বাঁধ নির্মাণ করলে বাজারে পানি আর আসবে না।
মহারশী নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর ইউনিয়নের অন্তত ৬টি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। সোমেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ধানশাইল ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ধানশাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ দাঁড়িয়ার পাড় এলাকার হোসেন আলী বলেন, পাহাড়ি ঢলে আমাদের বাড়িঘরে পানি ওঠে যাচ্ছে। গরু বাছুর নিয়ে কষ্টে আছি। একই গ্রামের সাহেলা বানু বলেন, ঘুম থেকেই ওইডাই দেহি উডানে পানি। চুলাডাতেও পানি ওঠছে। রান্নার কোন বাও (ব্যবস্থা) নাই। সহালে পুলাপাইন নিয়া মুড়ি খাইছি।
সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও ঝিনাইগাতী ক্ষুদ্র বণিক সমবায় সমিতির নেতা জাহিদুল হক মনির বলেন, মহারশী নদীর পানি বেড়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উপজেলা চত্বর, স্কুল, বাজার এবং আশেপাশের কয়েকটি এলাকায় পানি ওঠতে শুরু করেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে কাঁচা বাজার ও খাদ্যপণ্যের দোকানে হঠাৎ করে পানি প্রবেশ করেছে। এতে মালামাল নষ্ট হওয়ার আশংকায় আছেন তারা। তবে বাজারের পানি যদি বেশিক্ষণ স্থায়ী না হয় তাহলে ক্ষতি কম হবে। এছাড়া অনেকের মাছে ঘেরে পানি ঢুকে মাছ বেরিয়ে গেছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ বলেন, সকাল থেকে পানি আসতে শুরু করেছে। উপজেলা পরিষদে পানি উঠায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। পানিবন্দি মানুষের পাশে উপজেলা প্রশাসন আছে, তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।