চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের একজনের বাড়ী শেরপুর জেলা সদরে,তার নাম রমজানুল ইসলাম রনি।
নিহতদের প্রকাশিত তালিকায় রনি’র নাম ৯ নাম্বার সিরিয়ালে, সে শেরপুর সদরের চরশেরপুর ইউনিয়নের হেরুয়া বালুঘাটা গ্রামের দলিল লেখক আবুল আঙ্গুরের বড় ছেলে।
রনির বালুরঘাট বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। রনি’র জেঠি, ভাই ও বোনসহ স্বজনরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না এমন মৃত্যু।
জানাযায়, সে গত দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেয়, বর্তমানে পোস্টিং ছিল সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনে। রনি তার স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে ভাড়া থাকতো, বিস্ফোরণে নিহত হওয়ার পর তার স্ত্রী রুপা খাতুন মেডিকেলে তার পরনের গেঞ্জি দেখে তার মরদেহ শনাক্ত করেন। তার বাবা কারাগারে থাকায় তার ছোট ভাই, চাচা আবুল কাশেম ও তার মা চট্রগ্রামের গিয়েছেন মরদেহ আনতে।
রমজানের চাচা ২নং চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মো. জামান মিয়া জানান, রমজানুল ইসলাম রনি গত দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসের চাকরিতে ফায়ার ফাইটার হিসেবে যোগ দেন এবং তিন মাস আগে সে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে বদলি হয়। এরপর থেকেই আট মাস আগে বিয়ে করা শ্রীবরদীর বাসিন্দা স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই বাসা নিয়ে থাকছিল রমজান। রমজানের ছোটভাই তারিকুল ইসলাম রকিব ময়মনসিংহের একটি কলেজে ডিগ্রীতে পড়াশোনা করেন। শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে দায়িত্ব পালনে বাসা থেকে গেঞ্জি পড়েই বেরিয়ে যায় রমজান। এরপর থেকে রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তার মোবাইল ফোনে না পাওয়ায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া বিকৃত লাশের মাঝে গেঞ্জি দেখে তার লাশ শনাক্ত করে স্ত্রী রূপা খাতুন।
রনির সত্তরোর্ধ দাদা ইউনুস আলী বলেন, আমার বড় নাতি রনি। রনির টাকায় চলতো তাদের সংসার।ছোট নাতিদের পড়াশুনার খরচসহ সবকিছু রনি দেখতো। আমার রনি’ই এখন নেই। আগুনে পুড়ে মারা গেছে। আমার ছেলেটাও মামলায় জেলে। কিভাবে কি করবো আমি, বুঝতেছি না।
রনির জেঠি বলেন, বড় পুলাডার কামাই দিয়েই সংসারডা চলতো। বাপ’টাও মামলায় জেলে। এহন আমগোর পুলাডা আগুনে পুইড়া মরে গেছে, লাশ আনতে গেছে। এ বলেই হাউমাউ করে কানা শুরু করে।
তার আকস্মিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।