প্রভাষক মহিউদ্দিন সোহেল :
নয় বছর পেরিয়ে আগামী কাল ২৬ মার্চ দশম বছরে পদাপর্ণ করছে শেরপুরের পাঠক প্রিয় ও জেলার প্রথম জেলাভিত্তিক অনলাইন গণমাধ্যম শেরপুর টাইমস । এটি আমার জন্য যেমন খুব আনন্দদায়ক আবার কিছুটা বেদনাদায়কও বটে। গেল এ কয়েকটা বছর নিজের সন্তানের মতো আগলে রাখা গণমাধ্যমটি এখন আর্থিক সংকটের পাশাপাশি সহ্য করছে নানা প্রতিকুলতা । সহযোগিতা-অহযোগিতার অন্তজালে হরহামেশায় যাতনায় পুড়ছি । সংকটে ভেঙ্গে পড়ি, উদ্যোগে আবার উঠে দাড়াই, নবউদ্যোমে শুরু হয় পথযাত্রা , এভাবেই চলছি….. । পাঠক আর হতাশার কথা শুনাতে চাইনা।
সীমিত জনবল নিয়ে বিশেষ গোষ্ঠির আর্থিক সহায়তা ছাড়া মাত্র নয় বছরে শেরপুর টাইমস যে সফলতা অর্জন করেছে তা রীতিমতো ঈর্ষণীয়। শেরপুর টাইমসের সংবাদকর্মীদের কঠোর পরিশ্রম, মমত্ব বোধ সঙ্গে তাদের একান্ত আন্তরিকতা ছাড়া এ অনলাইন পত্রিকাটির পাঠক প্রিয়তা বাড়ানো কোনভাবেই সম্ভব ছিল না। এ জন্যে এ গণমাধ্যমটির একজন ক্ষুদ্রকর্মী হিসেবে মেধাবী সেসব সংবাদকর্মী ও সম্পাদনা পরিষদের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
ভালবাসা জানাতে চাই আমার অভিবাবক, শেরপুর টাইমস পরিবারের অভিবাবক শেরপুরের স্বনামধন্য মিমোজা শপিংমলের স্বত্বাধিকারী ক্রীড়া অনুরাগী শ্রদ্ধাভাজন জাকির হোসেন বাচ্চু ভাইয়ের প্রতি যার ভালবাসায় ও স্নেহে আজও শেরপুর টাইমস পথচলা কিছুটা হলেও সহজতর। ভালবাসায় রাখতে চাই শেরপুর টাইমস পরিবারের আরেক প্রিয়মুখ যার চিন্তায় মননে একটি সুন্দররূপ পেয়েছে শেরপুর টাইমস । সেই প্রিয়ভাই,প্রিয় বন্ধু ই-কেয়ার বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান স্বপ্ন ভাইয়ের প্রতি।
যখন একটি স্থানীয় অনলাইন গণমাধ্যম নয় বছরে পা দেয়, তখন মানবজীবনের রূপক টেনে এ কথা তো বলাই যায় যে, সে প্রাপ্তবয়স্কের পথে। কিন্তু খামখেয়ালী বশে এমন কথা বলা খুব ছেলেমানুষি হবে, কারণ একটি গণমাধ্যমকে প্রায় প্রথম থেকেই প্রাপ্তবয়স্কতা দেখাতে হয়। তার পক্ষে হামাগুড়ি-দেয়া শৈশব থেকে যৌবনে পৌঁছানোর এই সুযোগ থাকে না, পাঠকরা কোনো কোনভাবেই অপরিণত অবস্থাকে ক্ষমা করে না। ফলে প্রথম থেকেই তাকে কোমর বেঁধে নামতে হয় এবং প্রথম রাতেই বিড়াল মেরে শুরু করতে হয়। ‘শেরপুর টাইমস’ যে এমন শুরু করতে পেরেছিল তার প্রমাণ তার দশ বছরে পৌঁছে যাওয়া।
বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধ্যম এখন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। শেরপুর টাইমসের সামনেও অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে বলে আমি মনে করি। আজকাল ভুইফোড় সাংবাদিক ও নামকাওয়াস্তে চলা গণমাধ্যম, অসাংবাদিকদের পেশাগত আচরণের বিরোধিতা করে প্রভাবশালীদের সাথে অশোভন আঁতাত, ক্ষমতার সাথে থাকা একশ্রেনীর জ্ঞানপাপিদের হোমরাচুমড়া আচরণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। সমাজে বেড়েছে অসহিষ্ণুতা । সমাজের সর্বত্র অসহিষ্ণুতা প্রকট রূপ নিয়েছে। এর ফলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। যুক্তির বদলে জবরদস্তি চলছে। এই পরিবেশে শেরপুর টাইমস কেন,যেকোনো সংবাদমাধ্যমের পক্ষে গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়ানোর কাজটি খুব কঠিন। তবে হাল ছেড়ে দিতে চায়না শেরপুর টাইমস।
সংবাদ পরিবেশনে বস্তুনিষ্ঠতা, দায়িত্বশীলতা, নিরপেক্ষতা বজায় রেখে শেরপুরের সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে আমাদের পথচলায় পরিচালনা পরিষদ বিশেষ করে গণমাধ্যমটির প্রকাশক,শেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক তরুন শিল্পপতি আনিসুর রহমান, সম্পাদক শাহরিয়ার মিল্টন, উপদেষ্টা সম্পাদক রফিক মজিদ, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা, বার্তা সম্পাদক এম.সুরুজ্জামান, প্রধান প্রতিবেদক সুজন সেন,স্নেহের অনুজ ইমরান,শাকিল,মনির ,নাইম, পাপ্পু, জুয়েল,প্রিয়ভাজন রমেশ সরকারসহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি। বলতে চাই ভালবাসা জানবেন,ভালবাসায় রাখবেন।
৯ বছর আগে যখন এর যাত্রা শুরু হয়, সেই সময় থেকেই সঙ্গে ছিলাম, আজও আছি সহযোদ্ধা হয়ে । এটি আমার জন্য আনন্দময় অনুভূতি। এগিয়ে যেতে চাই শেরপুরবাসীকে সাথে নিয়ে,তুলে ধরতে চাই প্রিয় শেরপুরের প্রতিটি গ্রামের খবর । ন্যায়ের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আগের মতোই সোচ্চার থাকবো, এটাই এই ৯ বছর পূর্তির প্রত্যাশা।
লেখক :
নির্বাহী সম্পাদক, শেরপুর টাইমস।