শেরপুরে এএসআই আরিফুজ্জামান সোহাগের কাছে স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়ার দাবী আদায়ে প্রথম বার সোহাগের বাড়িতে অনশন করলেও কাবিন নামা সাথে না থাকায় ব্যর্থ হয়ে অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের এএসআই আরিফুজ্জামান সোহাগসহ তার পরিবারের আরো ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শেরপুর সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী। পুনরায় ২৪ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল থেকে কাবিন নামা হাতে নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো আমরন অনশন করছে মাষ্টার্স পড়ুয়া ওই শিক্ষার্থী। এর আগে সে দাবী আদায়ের লক্ষ্যে সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনায় ইন্সপেক্টর জেনারেল, ডিআইজি (ডিসিপ্লিন) ও এ্যাডিশনাল আইজি (এসবি), বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশ হেডকোয়াটার্স-ঢাকায় অভিযোগ দেওয়াসহ যথাযথ কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন।
অভিযোগ ও আবেদন পত্রের তথ্যমতে জানা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার পূর্ব আলীনাপাড়া (খালপাড়) এলাকার মৃত আনিছুর রহমান দুলালের ছেলে পুলিশ প্রশাসনের এএসআই মোঃ আরিফুজ্জামান সোহাগ (১২৫, এসবি-ঢাকা, বিপি-৮৮০৭১২৮৭৪৭) ওই শিক্ষার্থীকে টাঙ্গাইলে এক আত্মীয়র পরিচিত বাড়িতে নিয়ে আরিফুজ্জামানের ছোট বোনের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখার শর্তে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে মেলামেশা করে। তারপর থেকে শিক্ষার্থী নবীবগর বাসায় বাবা-মা না থাকলে সেই সুযোগে আরিফুজ্জামান ওই বাসায় গিয়ে মেলামেশা করত এবং বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে নিয়ে স্ত্রীর পরিচয় দিতো। কয়েক মাস পরে সোহাগের কাছে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে তার বাড়িতে ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধা থেকে আমরন অনশন শুরু করে। পরের দিন সন্ধ্যায় সদর থানার পুলিশ খবর পেয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায় এবং কাবিন নামা না থাকায় তার পরিবারের কাছে পরের দিন তাকে তোলে দেয়। তারপর ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দঃবিঃ ৮৯৩/৪৯৬/১০৯/৩৪ ধারায় আদালতে মামলা দায়ের করে ওই প্রতারিত শিক্ষার্থী। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই নালিশি মামলা দায়ের করলে আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তা আমলে নিয়ে আগামী ১৮ অক্টোবর অভিযুক্ত মৃত আনিছুর রহমানের ছেলে এএসআই আরিফুজ্জামান সোহাগসহ তার পরিবারের অপর ৫ জনকে স্বশরীরে হাজির হতে সমন জারির আদেশ দেন। কিন্তু মামলার সমনের নিদ্রিষ্ট তারিখের আগেই ২৪ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল থেকে কাবিন নামা সাথে নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো আমরন অনশন শুরু করেছেন সেই শিক্ষার্থী।
সোহাগের বাড়ির বাহিরের বারান্দায় বোরখা পরিহিত বসাবস্থায় প্রতারিত শিক্ষার্থী বলেন, আমি গতকাল বিকালে এই বাড়িতে এসেছি। কিন্তু বাড়ির লোকজন তাকে ঘড়ে ডুকতে দেয়নি। সারারাত একজন মেয়ে হয়েও রাতের আধারে বাহিরে বসে অনাহারী থেকে রাত কাটিয়েছি। এতেও কোন দুঃখ নেই যদি সোহাগকে স্বামী পাই এবং তার কাছে স্ত্রীর মর্যাদা পাই এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। কান্নারত অবস্থায় সে আরো বলে, সোহাগ বিয়ের কাবিন করেই তার স্বর্বস্ব হরন করেছে। সোহাগ আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে আমার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন পথ নেই। তার সাফ কথা বেচেঁ থাকলে সে সোহাগের স্ত্রী হিসেবেই থাকবে, নতুবা আত্মহত্যা করবে। তার দাবি আগের বার কাবিন নামা না থাকায় তাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি কিন্তু এখন সে কাবিন নামা সাথে নিয়ে এসেছেন। এখন কেন তাকে মেনে নেওয়া হচ্ছে না? এ বিষয়ে সোহাগের মা, বোন ও চাচা মঞ্জু বলেন, বিষয়টি যেহেতু কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে, সেহেতু বিষয়টি এখন আর স্থানীয় ভাবে কিছু করার নেই। আদালত যে রায় দিবে তা মেনে নিবেন তারা। সোমবার প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দ্বিতীয় বারের অনশন চলছে।
শেরপুর টাইমস/ বা.স