শেরপুরের শ্রীবরদীতে রাণীশিমুল ইউনিয়নের বাঘহাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে পূণ: নির্বাচনের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলার রাণীশিমুল ইউনিয়নের ভায়াডাঙ্গা বাজারের রাণীশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাসুদ রানার বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে ভায়াডাঙ্গা বাজারে মানববন্ধন করা হয়েছে।
গত ২৬ ডিসেম্বর ৪র্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রাণীশিমুল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বাঘহাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতি, অনিয়মের প্রতিবাদ ও পূনরায় ভোট গ্রহণের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে আ’লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসুদ রানা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আব্দুল হামিদ সোহাগের সাথে ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও অন্যান্য দায়ীত্ব পালনকারি অফিসারগণ আমারসহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের সিল মারা ব্যালট পেপার গণনা না করে মনগড়াভাবে ফলাফল ঘোষণা করেছেন। এতে আমার সুনিশ্চিত বিজয় বাধাগ্রস্ত হয়।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের দুইদিন পরে ২৮ ডিসেস্বর সকালে ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ছাবেদ আলী ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী মাখন মিয়াকে ফোন করে নিয়ে আসে এবং অফিস কক্ষ খোলতে বলেন। এসময় এলাকাবাসি প্রিজাইডিং অফিসার ছাবেদ আলীকে ভোট কেন্দ্রে দেখে সন্দেহ হলে তারা স্কুলে আসে এবং স্কুলের অফিস কক্ষে কালো কাপড়ে মোড়ানো সিল মারা বিপুল পরিমাণ ব্যালট পেপার দেখতে পায়। পরে লোকজন ছাবেদ আলীকে প্রায় ১ হাজার ৭ শত নৌকা প্রতীকের সিল মারা ব্যালট পেপারসহ আটক করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছাবেদ আলীসহ ব্যালট পেপার বস্তায় ভরে উপজেলায় নিয়ে আসে।
এসময় আমিসহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী এবং এলাকাবাসি ব্যালট পেপারগুলো প্রকাশ্যে গণনা করে জব্দ তালিকা তৈরি করে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও প্রশাসন তা করে নাই। উদ্বারকৃত সিল মারা নৌকা প্রতীকের ১৭ শত ব্যালট পেপার গণনায় আসলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হতাম। এনিয়ে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশার বরাবর আমার গণনা বিহীনভাবে ভোট কেন্দ্রে ফেলে রাখা নৌকা প্রতীকের ১৭ শত সিল যুক্ত ভোট চুড়ান্ত ফলাফলে যোগ পূর্বক আমাকে বিজয়ী ঘোষণা অথবা গেজেট প্রকাশ না করে উক্ত ভোট কেন্দ্রে পূণরায় নির্বাচন প্রদানের সিদ্ধান্তদানে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। পরে ১৩ জানুয়ারি ময়মনসিংহ অঞ্চল অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বাঘহাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনের দুই দিন পর ব্যালট উদ্ধারের ঘটনায় আমার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করেন।
এসময় রিটানিং অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা আমার প্রতিদ্বন্দ্বি ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হামিদ সোহাগের সাথে হাত মিলিয়ে এক তড়ফা তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেন। এটা আমি বুঝতে পেরে পুণরায় ২৫ জানুয়ারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আর একটি অভিযোগ দায়ের করি। আমার অভিযোগটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমলে নিয়েছেন। আমি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই ভোট কেন্দ্রে পুণরায় নির্বাচনের দাবী করছি। সংবাদ সম্মেলন শেষে দলীয় নেতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারন ভোটাররা ভায়াডাঙ্গা বাজারে মানববন্ধন করে।
এ ব্যাপারে আব্দুল হামিদ সোহাগের সাথে কথা হলে তিনি জানান, জনগন আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। রাণীশিমুল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কমকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনার তদন্ত করবে। এ ব্যাপারে আমি কোন কিছু বলতে পারবো না। উপজেলা নির্বাচন অফিসার এন এম সাজ্জিল সাদিক বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।