যুগের পর যুগ পেরিয়ে গেলেও শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর ডাকাবর এলাকায় এখনও নির্মিত হয়নি সেতু। এতে ভোগান্তির মধ্যেই একটি নৌকায় চলছে নদীর দুই পাড়ের মানুষ। প্রতিনিয়ত দৈনন্দিন কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের। তাদের মৌলিক চাহিদা মিটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বিশেষ করে, কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা, ফসলি জমির সার ওষুধ পরিবহনে অসুবিধা, জমির ফসল ক্রয়-বিক্রয়ে অসুবিধা, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠ গ্রহণে অসুবিধা, এ ছাড়া অসুস্থ লোকজনকে দ্রুত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হতে হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও নেই কোন বাস্তবায়ন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের ডাকাবর-মরিয়মনগর রাস্তার মাঝপথে দিয়ে বয়ে গেছে মহারশি নদী। এ পথ দিয়ে নলকুড়া ইউনিয়নের নলকুড়া, কুশাইকুড়া, ভারুয়া, ফাকরাবাদ, গজারীকুড়া, গজারীপাড়া বারোয়ামারী, ডাকাবরসহ প্রায় ১৫ গ্রামের বাসিন্দারা যাতায়াত করে থাকেন। নলকুড়া থেকে ঝিনাইগাতী উপজেলা শহরের দূরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার। কিন্তু মহারশি নদীর ডাকাবর এলাকায় একটি সেতু না থাকায় শহরে যাতায়াত করতে প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। আর এতেই বেড়ে যায় নদীর দু’পাড়ের প্রায় ১৫ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নলকুড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে উপজেলা শহরে যাতায়াতের জন্য একটি নৌকা ব্যবহার করছেন। নৌকাটির দুইপাশেই রশি বাঁধা। নৌকাটিতে উঠে রশি টান দিয়ে নদীটি পাড়াপাড় হচ্ছেন তারা।
বারোয়ামারী এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, ‘এখানে এর আগে গ্রামবাসীর স্বেচ্ছায় তৈরি বাঁশের সাঁকো থাকলেও গত বছর প্রবল বর্ষণে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাঁকোটি ¯স্রোতে ভেসে গেছে। পরে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য দুই-তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে একটি নৌকা দেওয়া হয়। ওই নৌকা দিয়েই আমরা সবাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীর পাড় হয়।’
ঝিনাইগাতী মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী নাবিলা বলেন, ‘নদীতে সেতু না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে আমরা ভয় নিয়েই নৌকা দিয়ে নদী পাড় হয়। কিন্তু বর্ষার সময় নদীতে পানি হলে কলেজে যাওয়া অসুবিধা হয়ে যায়। ওইসময় কলেজের পাঠ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
নলকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. মজনু মিয়া বলেন, ডাকাবর এলাকায় মহারশি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় বিভিন্ন সময় আলোচনাও হয়েছে। আশ্বাসও পাওয়া গেছে। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক বলেন, এখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।