শেরপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক তালাপতুফ হোসেন মঞ্জুর লাশ পৌরসভার ময়লাবাহী গাড়ি দিয়ে পরিবহনের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদের বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার করতে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন পৌর মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। ২৯ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে শহরের মাধবপুরস্থ শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ওই ব্যাখ্যা দেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় পৌর মেয়র বলেন, পৌরসভার নিজস্ব কোন লাশবাহী গাড়ি না থাকায় অনেক আগে থেকেই ওই গাড়িটি পৌরবাসীর লাশ পরিবহনে ব্যবহার হয়ে আসছে। লাশ বহনের পূর্বে গাড়িটি ধুয়ে-মুছে পরিস্কার করে দেওয়া হয়। এতে পৌরবাসী উপকৃত হচ্ছে বলেই জানি। এরই ধারাবাহিকতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম তালাপতুফ হোসেন মঞ্জুর পরিবারের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ গাড়িটি ব্যবহারের জন্য মৌখিকভাবে চাইলে গাড়িটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে লাশ পরিবহনের জন্য প্রদান করি। পৌরসভার এ গাড়িটির বিকল্প আর কোন গাড়ি নেই। কিন্তু ওই পরিবহনে মুক্তিযোদ্ধার লাশ বহন করা নিয়ে দু’একটি গণমাধ্যমে ভিন্নভাবে খবর প্রকাশ করায় পৌর কর্তৃপক্ষ মর্মাহত হয়েছে। এজন্য একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের বিনামূল্যে সেবামূলক কাজে গণমাধ্যমকর্মীদের সুচিন্তিত ও গঠনমূলক পরামর্শও তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, শেরপুর পৌরসভা ইতোমধ্যে লাশবাহী পরিবহন ক্রয়ের জন্য আর্থিক সংস্থান করেছে এবং লাশবাহী গাড়িটি ক্রয়ের অনুমতির জন্য মন্ত্রণালয়ে পরপর দুটি পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি নিজেও স্ব-শরীরে বেশ কয়েকবার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন পৌরসভাতেই লাশবাহী গাড়ি ক্রয়ের অনুমতি না দেওয়ায় আমরাও অনুমতি পাইনি। আর অনুমোদন না পাওয়ায় গাড়িটি ক্রয় করতে পারছি না। তবে আশা করছি, খুব দ্রুত গাড়ি ক্রয়ের অনুমতি পাবো।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানান, আমরাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম তালাপতুফ হোসেন মঞ্জুর লাশ পরিবহনের জন্য গাড়িটি পৌরসভার কাছে চেয়েছিলাম।
মতবিনিময় সভায় পৌর প্যানেল মেয়র-১ নজরুল ইসলাম, শেরপুর প্রেসক্লাব সভাপতি মো. শরিফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, সিনিয়র সহ-সভাপতি মলয় মোহন বল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক দত্তসহ জেলার কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক তালাপতুফ হোসেন মঞ্জু। পরে শহরের সজবরখিলাস্থ বাসা থেকে তার লাশ পৌরসভার ময়লা পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাকে করে প্রথমে জানাযার জন্য শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্কে এবং পরে দাফনের জন্য চাপাতলী পৌর কবরস্থান পর্যন্ত বহন করা হয়। এ নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।