কথায় আছে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়, আর সেই ইচ্ছা থাকলে কোন বাধাই আটকিয়ে রাখতে পারে না কাউকে। তেমনি এক নজির স্থাপন করা শেরপুরের অদম্য প্রতিবন্ধী মেয়ে সুরাইয়া জাহান। নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পা দিয়ে লিখে এবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেফমুবিপ্রবি) কেন্দ্রে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেফমুবিপ্রবি) কেন্দ্রে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৪ অক্টোবর) এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন অদম্য সুরাইয়া জাহান।
হাত অকেজো, অস্পষ্ট ভাষা, চোখের ইশারায় ভাব বিনিময় করা সুরাইয়ার স্বপ্ন আকাশ ছোঁয়া। তাইতো কোনো প্রতিবন্ধকতাই সুরাইয়াকে দমাতে পারেনি। অন্য সব শিক্ষার্থীর মতো চেয়ার-বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দিতে না পারলেও তিনি অংশ নিয়েছেন ভর্তিযুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ২৮ নম্বর কক্ষে মেঝেতে মাদুরে বসে পরীক্ষা দেন অদম্য সুরাইয়া। এ কক্ষে ভর্তিচ্ছুক পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩০ জন।
সুরাইয়া জাহানের গ্রামের বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলা আন্ধারিয়া সুতিরপাড়। বাবা মাওলানা মো. ছফির উদ্দিন। ২০১৮ সালে সুরাইয়া শেরপুর সরকারী ভিক্টোরিয়া একাডেমীতে পায়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। ওই বছরের এসএসসিতে জিপিএ পান ৪.১১। পরে ২০২০ সালের এইচএসসিতে জিপিএ ৪.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।
সুরাইয়ার মা মুর্শিদা ছফির বলেন, তিন মেয়ের মধ্যে সুরাইয়া প্রথম। মেয়েটা জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। কিন্তু আমি কখনই সেটার জন্য মন খারাপ করিনি। মেয়েকে নিয়ে আজকের এই অবস্থানে আসার পেছনের গল্পটাও সংগ্রামের। আমি চাই যে আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন তার এগিয়ে যাওয়ার পথে সঙ্গী হয়ে থাকব। আমার আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেয়ে উত্তীর্ণ হবে এবং একদিন বড় অফিসার হবে। এ জন্য তিনি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে দেশের ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জিএসটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বঙ্গমাতা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগ মিলিয়ে মোট এক হাজার ৮২১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন।
ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য বশেফমুবিপ্রবির ওয়েবসাইট www.bsfmstu.ac.bd, ফেসবুক পেজ ও www.gstadmission.ac.bd এ পাওয়া যাবে।