শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে সরকারীভাবে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামুল্যে সরিষা বীজ ও রাসায়নিক সার কৃষি প্রণোদনা হিসেবে বিতরণ করায় উপজেলায় সরিষা চাষী বেড়েছে দ্বিগুণ। আর এ সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের হাতছানিতে এসব কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক। সবুজ ফসলের মাঠে এখন হলুদের আভায় মৌ মৌ গন্ধ বইছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ২৭০ হেক্টর জমিতে এ বছর সরিষার আবাদ হয়েছে। এ বছর কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ৫০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষদের মাঝে ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে সরিষা চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ বিনামুল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৫০০ চাষিরা নিজেরাই আগ্রহী হয়ে সরিষা চাষ করায় চাষি সংখ্যায় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার। গত বছর ১ হাজার জন চাষি সরিষা চাষ করেছিল। এবার তা দ্বিগুণ হয়ে চাষীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার জন। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে মাঠঘাট। মাঠে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে সরিষা চাষের জমিতে আশ-পাশ।
উপজেলার কুচনিপাড়া গ্রামের কৃষক আলমা রহমান বলেন, ‘এবার এক বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। বেশ ভালো ফুল ধরেছে। আশা করা যায় ফলন ভালো হবে।’
ধানশাইল গ্রামের কৃষক জয়নাল বলেন, ‘আমি এক একর জমিতে সরিষার চাষ করেছি। মাঠে বেশ ফুল ফুটেছে। আশা করছি ফলন ভালো হবে। সরিষায় ধানের চেয়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরের মতো এবারও আবাদ করেছি।’
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সরকারীভাবে বিনামুল্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ভালো মানের সরিষা বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, এ বছর যে পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। তাই ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।’