শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ২য় শ্রেণি পড়–য়া ৮ বছর বয়সী এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ধর্ষণের চেষ্টাকারী মসজিদের ইমাম, মক্তব শিক্ষক আজিজুল হক, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও গ্রাম্য মাতব্বরসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মামলা দায়েরর পর তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার বিকালে গ্রেফতারকৃতদের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে হাজির করার প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, উপজেলা নয়াবিল ইউনিয়নের মৌওয়াকুড়া গ্রামের কোরবান আলীর ৮ বছর বয়সী কন্যা শিশু গত ৪ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় মক্তবে পড়তে যায়। এসময় বৃষ্টি থাকায় মক্তব শিক্ষক এবং মৌওয়াকুড়া মসজিদের ইমাম আজিজুল হক ছুটি ঘোষণা করে কন্যা শিশুটিকে মক্তব ঘরে নিয়ে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এসময় শিশুটি ডাক চিৎকার শুরু করলে তার মুখ চেপে ধরে থামিয়ে শিশুটিকে ছেড়ে দেয় এবং এ কথা কাউকে বলতে নিষেধ করে।
পরদিন বুধবার বিষয়টি অভিভাবকসহ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই এলাকাবাসী ও কন্যা শিশুর অভিভাবক অভিযুক্ত আজিজুল হককে মক্তবে অবরুদ্ধ করেন। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবরুদ্ধ থাকার পর রাতে এ নিয়ে গ্রাম্য শালিস বৈঠক বসে। শালিসে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে অভিযুক্ত আজিজুলকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
এদিকে ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্ত আজিজুলকে তার নিজ বাড়ি চারআলী গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। পরে ভুক্তভোগী শিশুটির মা বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে শালিসে উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস আলী দেওয়ান, ইউপি সদস্য শাহজাহান মিয়া, ইউপি সদস্য আজাহার আলী, গ্রাম্য মাতব্বর ফুল মামুদ ও ইসমাইলকে থানায় ডেকে পাঠিয়ে তাদেরও গ্রেফতার দেখানো হয় এবং ওই রাতেই শেরপুর সদর থানা হেফাজতে পাঠানো হয়। এছাড়াও এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামী আরেক ইউপি সদস্য সুরুজ আলী পলাতক রয়েছে।
এ সম্পর্কে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সারোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিকটিম শিশুটির ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করতে শেরপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের শুক্রবার বিকালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে হাজির করার প্রক্রিয়া চলছে।