মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন :
দরজাটা হালকা করে খুলে এক যুবক স্যার আসতে পারি, বলে দাড়িয়ে রইল। পরনে জিন্সের প্যান্ট, পায়ে কেডস, গায়ে টি-শার্ট। গায়ের রঙ শ্যামলা হলেও দেখতে বেশ হ্যান্ডসাম। একটা কালো সানগ্লাস তার হাতে। মনে হয় সানগ্লাসটা এতক্ষণ সে পরেই ছিল। দরজার সামনে দাড়ানোর আগে সে খুলেছে। আজ আমার প্রচণ্ড ব্যস্ততা। আজ এবং আগামীকাল পর পর দু’টি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং। মিটিংএর কাগজপত্র রেডি করতে হিমশিম খাচ্ছি। কারও সাথে কথা বলার মত সময় নেই। কিন্তু আমি তার দিকে তাকাতেই মনে হল ছেলেটিকে কোথাও যেন দেখেছি। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আসতে বললাম।
-স্যার আমাকে কি চিনতে পেরেছেন? ছেলেটি জানতে চাইল।
-ঠিক চিনতে পারছি না। তবে কোথাও যেন দেখেছি বলে মনে হচ্ছে।
-স্যার আমার নাম আসিফ। আমার বাড়ি মাতুয়াইল। আপনি আমাকে একসময় পড়িয়েছেন। আমি তখন প্রাইমারী স্কুলে পড়তাম। আমার একটা বোন আছে। তার নাম আসিয়া। আমরা দু’ভাই বোনই আপনার কাছে পড়েছি। আপনার কি মনে পড়েছে?
-হ্যাঁ, এবার মনে পড়েছে। তুমি আমাকে চিনলে কীভাবে?
-সত্যি কথা বলতে আমি আপনাকে প্রথমে চিনতে পারিনি। আপনার রুমের সামনে নাম দেখলাম আকিল মিয়া। তখনই আমার মাথায় হঠাৎ চলে এল এ নামে তো আমার একজন স্যার ছিলেন। আপনার নামটাও আনকমন। সচরাচর শোনা যায় না। নামটা দেখে আমি চলে গেলাম আপনাদের অফিসের ফটোবোর্ডে। বোর্ডে ছবি দেখে অনুমান করলাম আপনি হতে পারেন।
-এবার বল তোমাদের কী খবরাখবর? তোমার বাবা কি সুস্থ হয়েছেন?
-না। বাবার অবস্থার আর উন্নতি হয়নি। আসিয়া সিলেট মেডিকেলে পড়ে। আর আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষায় মাস্টার্স শেষ করেছি। বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে যোগদানের জন্য নিয়োগপত্র পেয়েছি।
আমার তো চক্ষু চড়কগাছ। এই ছেলে বলে কি! চতুর্থ শ্রেণিতে যে ছেলে সব বিষয়ে ফেল করেছিল সেই ছেলে নাকি পররাষ্ট্র ক্যাডারে চাকুরি পেয়েছে! আর যে মেয়েটিকে হাতে বই ধরানো যেত না সেই মেয়ে নাকি পড়ে মেডিক্যালে! আমি বেশ বড়সড় একটা ধাক্কা খেলাম। আসিফ বলছে, স্যার কি কিছু ভাবছেন? তার কথায় সম্বিত ফিরে পেলাম।
-না কিছু ভাবছি না। তুমি কি জন্য এসেছ বল?
-আমার কিছু পেপার্স সত্যায়িত করাতে হবে স্যার।
-ঠিক আছে দাও।
আসিফ চলে যাওয়ার পরও আমার ঘোর কাটল না। কৌশলে আমি তার নিয়োগ প্রজ্ঞাপনটাও দেখেছি আমার সন্দেহ দূর করার জন্য। এসএসসি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত সকল সনদপত্র সত্যায়িত করার সময় রেজাল্টও দেখেছি। সকল স্তরে ভাল রেজাল্ট।
আমার বেকার জীবন শুরু হয় শেরপুর জেলার কুতুবপুর গ্রামে। মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে সবাই যখন চাকরির সন্ধানে বের হয়ে পড়ে তখন আমি বাবার হোটেলে আরামসে দিন কাটাই। একদিন গ্রামের কিছু দুষ্টু মানুষের ধাওয়া খেয়ে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করি। ধাওয়া খাওয়ার কারণটা আজ বলব না। ডেমরা থানাধীন মাতুয়াইল কবরস্থানের কাছাকাছি একটা মেসে আমার বেকার জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়। টিউশনির ফাঁকে ফাঁকে চলে চাকরির জন্য পড়ালেখা। আমার মেসের এক সদস্যের মাধ্যমে আসিফ এবং তার বোন আসিয়াকে পড়ানোর অফার পাই।
আমার সেই মেসম্যাট আমাকে একদিন আসিফের বাবা-মার সাথে আলাপ-পরিচয় করে দিয়ে আসে। আসিফের মায়ের বয়স সাতাশ-আটাশ বছরের বেশি হবে না এবং দেখতে অসম্ভব সুন্দরী। ভদ্র মহিলা স্পষ্ট স্বরে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেন। তিনি সব সময় সাজগোজ করে থাকেন বলে মনে হল। পক্ষান্তরে, আসিফের বাবা আকরাম সাহেবের বয়স মনে হল পয়ঁতাল্লিশের কম হবে না। জানতে পারলাম তিনি সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। চাকরি জীবনে কোন কারণে বিয়ে করেননি। চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর বিয়ে করেছেন। সেজন্য বয়সের পার্থক্যটা একটু বেশি। তার শারীরিক অবস্থা তেমন ভাল না। আমার মনে হল ভদ্রলোকের স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণেই হয়তো তাকে চাকরি থেকে অবসরে পাঠানো হয়েছে।
আসিফ পঞ্চম শ্রেণিতে আর আসিয়া তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। আসিফ চতুর্থ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় সকল বিষয়ে ফেল করেছে। বিশেষ বিবেচনায় তাকে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রমোশন দেয়া হয়েছে। আর আসিয়ার তো যা-তা অবস্থা। সে পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে কিন্তু বর্ণমালার সাথে পরিচয় আছে বলে মনে হল না। প্রথমদিনে আসিয়া ছেঁড়া-ফাঁড়া বই নিয়ে হাজির হল। সবে বছর শুরু হয়েছে। জানুয়ারি মাস না যেতেই বইয়ের আয়ু শেষ। কিছুক্ষণ বসার পরই আসিয়ার আসল রূপ বের হয়ে আসল। তাকে বাংলা পড়তে বললাম। পড়ব না বলে দৌড়ে চলে গেল। তার বাবা জোর করে ধরে বসিয়ে দিলেন। কিন্তু কাজ হল না। আবারও চলে গেল। আসিফ কোন কিছু পারে বল মনে হল না। প্রথমদিন শেষে আমি আসিফের বাবাকে জানিয়ে দিলাম, আপনার ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া কিচ্ছু জানে না। আমাকে যদি অনুমতি দেন আমি বেত ব্যবহার করব। বেত ছাড়া আপনার ছেলে-মেয়েদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে আর পথে আনার কোনও সুযোগ নেই। আসিফের মা কোনভাবেই বেত ব্যবহার করতে দিবেন না। আসিফের মা বললেন, অসম্ভব, আমার বাচ্চাদের গায়ে কোনরকম আঘাত করা যাবে না। আসিফের বাবা বললেন, আপনার যেভাবে পড়ালে তারা ভাল করবে আপনি সেভাবে পড়াবেন।
দ্বিতীয়দিনে আসিফকে আমি যোগ অঙ্ক শেখানো শুরু করলাম। কারণ সে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়লেও যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ কোনটাই পারে না। তের এবং সতের যোগ করতে যখন সে পারল না, তখন আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। আমি তার গালে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিলাম। সে কাঁদতে কাঁদতে মায়ের কাছে চলে গেল। তার সাথে সাথে আসিয়াও উঠে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর আসিয়া আমার পিছনে এসে কলম দিয়ে আমার শার্টে উল্টা-পাল্টা দাগাদাগি করে দিল দৌড়। ছেলের কান্নার সাথে আসিফের মাও চোখ মুছতে মুছতে এসে আমাকে বললেন, এভাবে আমার ছেলেকে মারবেন না। যদি মারেন তাহলে আর পড়াতে আসবেন না। ঠিক আছে, আর পড়াতে আসব না, বলে আমি চলে আসি।
প্রচণ্ড মন খারাপ করে মেসের দিকে রওনা হলাম। মন খারাপের কারণ টিউশনি হারানো নয়, কারণটি হল আমার শার্ট। টাকাটা তখনও উসুল হয়নি। ক্যাটস আই থেকে কেনা একদম নতুন শার্ট। সেদিনই প্রথমবার পড়েছি। এমনভাবে দাগ টানা হয়েছে দ্বিতীয়বার আর পড়ার সুযোগ নেই। শার্টটি সাদা রঙের হওয়ায় দাগগুলো ছোট্ট শিশুর আঁকিবুকির মত স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সকালবেলা ঘটেছে আরেকটা মন খারাপের ঘটনা। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার রেজাল্ট হয়েছে। আমি বাদ পড়েছি। সব মিলিয়ে আষাঢ়ের মেঘাচ্ছন্ন বিমর্ষ আকাশের মত গুমোট মন নিয়ে মেসে ফিরলাম। বিছানায় কিছুক্ষণ ঝিম মেরে শুয়ে রইলাম। মনটা তবুও ভাল হল না। তখনই আমাদের বুয়ার খিলখিল হাসি কানে আসল। একদম নিষ্পাপ হাসি। মনে হল তার দুঃখ-কষ্ট বলতে কিচ্ছু নেই। অত্যন্ত সুখী একজন মানুষ। অথচ তার স্বামী একটা অথর্ব। আমাদের মেস থেকে খাবার নিয়ে তাকে খাওয়াতে হয়। বুয়ার হাসিতে আমার মনের গুমোটভাব যেন হালকা হয়ে গেল। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ থেকে মেঘ সরে গেলে ধরণী যেমন আলোয় হাসতে থাকে ঠিক তেমন। এত কষ্টের মধ্যেও তারা যদি এত প্রাণ খুলে হাসতে পারে, তাহলে আমি কেন পারি না। সাথে সাথে বই খুলে পড়তে বসে গেলাম।
মাস দুই পর আমার মেসে হাজির হলেন আসিফের বাবা আকরাম সাহেব। আমাকে অনুরোধ করলেন আমি যেন তার ছেলে-মেয়েকে পড়াই। আমি বললাম, আমার দ্বারা সম্ভব না আপনার ছেলে-মেয়েকে পড়ানো। ক্লাস ফাইভে পড়া একজন ছাত্রকে যদি ক্লাস টুএর বিষয় পড়াতে হয়, তাহলে কীভাবে পড়াব? এধরণের গদর্ভ ছাত্রদের পড়াতে হয় কেজিং পদ্ধতিতে। কেজ মানে হল খাঁচা। এই পদ্ধতি হল, ঘরের ভিতর বন্দী করে পিটিয়ে পিটিয়ে পড়তে বাধ্য করা। আদরে আদরে মাথা খেয়ে ফেললে তো যা হবার তাই-ই হবে। প্রতিবছর সব বিষয়ে ফেল করবে। ফাইভের পর হবে পড়ালেখা জনমের তরে বন্ধ। আর মেয়েটার কথা আর কী বলব। লেখাপড়াতো কিছু শিখেইনি অধিকন্তু আদব-কায়দাও আপনারা কিছু শিখান নাই। আমার দ্বারা তাদেরকে পড়ানো সম্ভব বলে আমার মনে হয় না। আকরাম সাহেব বললেন, আকিল সাহেব, আমার মনে হয় আপনি এখন তাদের পড়াতে পারবেন। তারা এখন আর আগের মত নাই। আর ইচ্ছা করলে আপনি তাদের পেটাতেও পারবেন। আমি আপনার জন্য একটা বেত কিনে রেখে দিয়েছি। তবে আমার ধারণা আপনাকে আর বেত হাতে নিতে হবে না।
আমি পড়াতে গেলাম। আশ্চর্য পরিবর্তন। আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না। আসিয়ার বইগুলো সুন্দরভাবে বাধাঁই করা। পড়ার টেবিল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। একদম নিশ্চুপ। শিশুসুলভ কোন আচরণই তাদের মধ্যে নাই। তাদেরকে কোন প্রশ্ন না করলে কোন সাড়া দিচ্ছে না। তাদের আমি যা করতে বলছি মনোযোগ দিয়ে সেটাই করছে। পারছে না, কিন্তু বারবার চেষ্টা করছে। আসিয়ার দিকে আমি ভালভাবে তাকিয়েই দেখিনি। আজ তাকে দেখলাম। শিশুসুলভ মায়াবী চোখ। মনে হচ্ছে যেন রাজ্যের সকল দুঃখ ওর চোখে ভর করেছে। মাথার চুলগুলোকে দু’টি ঝুঁটি বেঁধে রেখেছে। খুব সুন্দর লাগছে তাকে। কিন্তু সে নীরব নিস্তব্ধ। মাথায় হাত দিয়ে আদর করতে ইচ্ছা করছে তাকে। প্রায় দু’ঘণ্টা হয়ে যায় তাদের মার কোন সাড়া শব্দ পেলাম না। তাদের ছুটির পর আকরাম সাহেব ধীরে ধীরে এগিয়ে আসলেন। আমার সামনে বসলেন। আসিফ আমাদেরকে চা দিয়ে গেল।
চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে আকরাম সাহেব প্রশ্ন করলেন, আজ কেমন দেখলেন বাচ্চাদের?
-আপনি বলেছিলেন তারা আগের মত নাই। চেন্জ হয়ে গেছে। কিন্তু এতটা চেন্জ আমি চিন্তাই করতে পারিনি। তারা কেন এমন হল? আমার কাছে মোটেই স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না।
-স্বাভাবিক মনে হওয়ার কথা নয়। আমার স্ত্রীকে আপনি দেখেছেন আজ?
-না। সেটাও আমার এক প্রশ্ন। তাকে তো দেখছি না। তিনি কোথায়?
-সকল পরিবর্তনের মূলেই তিনি। আপনি চলে যাওয়ার এক সপ্তাহ পর সে তার প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে।
বলেই আকরাম সাহেব বাকরুদ্ধ। তার গলা ধরে এসেছে। চোখ দিয়ে টপ টপ করে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। এও কি সম্ভব? যে ছেলের গায়ে তিনি সামান্য চড়ের আঘাত সহ্য করতে পারলেন না- কেঁদে-কেটে অস্থির হয়ে গেলেন। সেই ছেলে এবং ফুটফুটে একটা মেয়ে ফেলে রেখে চলে গেলেন! আকরাম সাহেব স্বাভাবিক হলেন। আবার কথা বলা শুরু করলেন।
দুনিয়াটা কত অদ্ভুত তাই না, আকিল সাহেব। স্বামী মারা গেলে সন্তানদের দিকে তাকিয়ে অনেক স্ত্রী আর দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন না। অথচ কেউ কেউ স্বামী-সন্তান রেখে অন্যের হাত ধরে ঘর ছেড়ে যায় কিন্তু কষ্ট হয় না। সে চলে যাওয়ার পর ছেলে-মেয়েদের আমি বাস্তবতা বুঝিয়েছি। আমি সৈনিক ছিলাম। আমার বুঝানোর ধরণও সেরকমই। তারা এখন সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়েছে। এ যুদ্ধে তাদের জয়ী হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছি। সবাই যেমন পরীক্ষায় পাশ করে তেমনি তাদেরও পাশ করার শক্তি আছে। সবাই শক্তি কাজে লাগায় আর তারা কাজে লাগায় না। যুদ্ধের ময়দানে অস্ত্র হাতে বসে থাকা নয়, অস্ত্রের সময়মত ব্যবহার নিশ্চিত করেই জয় ছিনিয়ে আনতে হয়। তাদেরকে এও বলেছি, তোমাদেরকে সময় এবং পরিশ্রম নামক অস্ত্র দু’টিকে অবশ্যই অবশ্যই সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। তোমাদেরকে জিততেই হবে এবং তোমরা জিতবে। আপনি জানেন না আকিল সাহেব, এ ক’দিনে আসিয়া রান্না করা শিখে গেছে। সে রান্না করে। আসিফ একা একা বাজার করে নিয়ে আসে। তার মার চলে যাওয়া তাদেরকে মানসিকভাবে বিরাট একটা ধাক্কা দিয়েছে। তাদের মা বেঁচে আছে অথচ তাদের সাথে নেই, এই ভীষণ কঠিন বাস্তবতা তাদের কচি মনকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। আপনি তাদের জন্য দোয়া করবেন।
সেই ঘটনার পর ঐ বছরের শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে পড়িয়েছিলাম। এরই মধ্যে সরকারি হাইস্কুলে আমার চাকরি হয়ে যায়। আমি মাতুয়াইল থেকে চলে আসি। আমি জানতাম তারা সে বছর ফেল করবে না। দীর্ঘ পনের বছর পর আসিফের সাথে আমার দেখা। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি চাকরি আমি চেন্জও করেছি। আসিফের মা আর ফিরে আসেননি। বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী। আসিফ-আসিয়া তাদের মার চলে যাওয়াতে যে মানসিক ধাক্কা খেয়েছে, সেই ধাক্কাই কি তাদের আজকের সফলতার কারণ? হলেও হতে পারে। কেননা, কাউকে অধঃপতনে যেতেওতো কোন না কোন ধাক্কাই কাজ করে, তাই না?
লেখক: মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, উপসচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।