শেরপুরের নকলায় মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদ, শিক্ষক ও শিক্ষানুরাগীদের অর্থায়নে গঠিত উপবৃত্তি তহবিল থেকে বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখার সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি বিতরণ করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে বুধবার (২২ জুলাই) উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মিলনায়তনে করোনা ভাইরাস (কোভিট-১৯) সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এক বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সহকারী শিক্ষক মাহবুব হোসাইন রূপমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উপবৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে করোনা ভাইরাস বিষয়ে সচেতনতা মূলক ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানোন্নয়নে পরামর্শ মূলক বক্তব্য রাখেন। এছাড়া করোনা কালীন সময়ে দেশের ক্রান্তিকালে শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাকদের উদ্দেশ্যে টেলি কনফারেন্সে মূল্যমান বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সাবেক চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর তাসলিমা বেগম। অন্যান্যদের মধ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন সহকারী মৌলভী মাওলানা মো. রেজাউল করিম ও সহকারী মৌলভী মাওলানা মো. ফজলুল করিম প্রমুখ।
এসময় সহকারী সুপার মাওলানা মো. আখতারুজ্জামান, মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সদস্য মেহেদী হাসান, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী আব্দুস ছাত্তার, সহকারী শিক্ষক মো. মোশারফ হোসাইন, মোসাম্মৎ রোকেয়া আক্তার, শওকত আলী, নুসরাত জাহান নীপা, মো. কাজিমদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান খান, জামাল উদ্দিন, কব্দুল হোসেন, আবুল মিয়া ও আমিন মিয়াসহ উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগন উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ইবতেদায়ী শাখার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদানের অর্থ গচ্ছিত রাখতে জনতা ব্যাংক নকলা শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়েছে, যার হিসাব নং ১০০১৪৩৮৭০৭৫২। এই মহতি উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে মাদরাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সাবেক চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিক্ষাবিধ প্রফেসর তাসলিমা বেগম উক্ত হিসাবে এককালীন ৫০ হাজার টাকা, নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান ১০ হাজার টাকা তাৎক্ষণিক জমা করেছেন। তাছাড়া এই কার্যক্রম স্থায়ী করতে মাদরাসার শিক্ষকরা তাদের প্রতি মাসের বেতন থেকে প্রতি শিক্ষক ১০০ টাকা থেকে ২০০ করে স্বেচ্ছায় উপবৃত্তি তহবিলে জমা করছেন। এমনকি ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরাও নিজেদের ইচ্ছায় প্রতি মাসে ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা করে শ্রেণী শিক্ষকদের কাছে জমা করছেন তাদের ছোট ভাই বোনদের উপবৃত্তির জন্য। এসব গচ্ছিত টাকাতেই চলছে ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির স্বার্থে যে কেউ উক্ত হিসাবে টাকা জমা দিতে পারবেন বলে জানান মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। এতে করে এলাকার অন্যান্যরা ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছায় দান করতে উৎসাহিত হবেন। ফলে আজ পর্যন্ত সরকার ইবতেদায়ী শাখার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও মিড-ডে মিল চালুর ব্যবস্থা না করলেও, নিজেদের অর্থায়নে ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি ও মিড-ডে মিল চালু রাখা সম্ভব হবে। তাতে ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করছেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষানুরাগী মহল।