সামান্য বৃষ্টি হলেই শেরপুরের নকলা পোস্ট অফিস চত্তরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৩মাস হাঁটু পানির উপর ভাঁসে উপজেলা সদরের ওই পোস্ট অফিসটি। ভবনের ভিতরে ব্যবহার করার মতো ভালো কোন টয়লেট নেই। দরজা ভাঙ্গা, পলেস্তার উঠে যাওয়া, শত ফাটলে ভরপুর একটি টয়লেট থাকলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ সেখানে ঢুকতে চায়না। ফলে নতুন করে আর কোন গ্রাহক বাড়ছে না। পুরনো তিন সহ¯্রাধিক গ্রাহকসহ পোস্ট অফিসের ই-সেন্টার থেকে বিভিন্ন সেবা নেওয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ জনগণ। এতে করে এখান থেকে সরকারের রাজস্ব খাতের আয় দিন দিন কমে আসছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পোস্ট অফিসের দক্ষিণ পাশ দিয়ে ঢাকা-শেরপুর রাস্তা, রাস্তা থেকে পোস্ট অফিসের ভবন ১০গজ দূরে অবস্থিত; পূর্ব-পশ্চিমে দোকানপাটের ভবন, উত্তর পাশে বাসাবাড়ি এবং পোস্ট অফিসের চারদিকে বাউন্ডারি থাকায় পানি যাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। অন্যদিকে আশেপাশের কিছু লোকজন সবার অজান্তে তাদের ব্যবহার্য্য ময়লা আবর্জনা পোস্ট অফিস চত্তরে তথা বাউন্ডারীর ভিতরে ফেলেন। তাছাড়া চতুর্দিকে বাউন্ডারী থাকায় পথচারিরা মলমুত্র ত্যাগ করতে ওই স্থানটি নিরাপদে ব্যবহার করেন। ফলে একটু বৃষ্টি হলেই পোস্ট অফিস চত্তরে হাঁটু পর্যন্ত বা তার চেয়েও বেশি পানি জমে থাকে এবং ময়লা অবর্জনা পঁচা ও মলমুত্রের দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন সাধারণ জনগন।
পোস্ট ই-সেন্টার থেকে সেবা নিতে আসা পৌরসভার কামাড়পট্টি এলাকার রফিকুল ও মোশারফ, কলেজ পট্টির ফয়সল, ধুকুড়িয়ার মানিক ও হারুনসহ বেশকিছু গ্রাহক বলেন, বর্ষা মৌসুমে এখান থেকে সেবা নিতে এসে একবার পচাঁ পানি দিয়ে হেটে যাওয়ায় কমপক্ষে ৩মাস বিভিন্ন চর্মরোগে ভুগতে হয়। তাই পারতপক্ষে এখানে সেবা নিতে আসিনা। ওই পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, এবিষয়ে লিখিত ও মৌখিক ভাবে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যাগুলোর সমাধান হতে পারে বলে তিনি জানান। পোস্টম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, পানির উপরদিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার সময় যেকোন কাগজ পানিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই আমরা সব সময় ঝুঁকিতে থাকি। তাছাড়া মল-মূত্র ত্যাগের সমস্যাসহ বর্ষামৌসুমের ৪-৫মাস চর্মরোগতো লেগেই থাকে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম তালুকদার বলেন, তথ্য প্রযুক্তির দাপটে পোস্ট অফিসের অবস্থা এমনিতেই নাজুক হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় নানান সমস্যা দেখা দিলেতো কেউ আর পোস্ট অফিসের দিকে আসবে না। সরকারের এদিকে জরুরি নজর দেওয়া দরকার বলে তিনি বলে মনে করেন।
রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে ও জনসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে ভবন নির্মাণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ করার দাবী জানান সবপেশা শ্রেণির মানুষ।