আবু বকর সিদ্দিক বয়স ৬৭ বছর। গত শীতের সন্ধ্যা রাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ কালে ইউএনও রুবেল মাহমুদ তাকে (বকর) গোয়াল ঘরে শুয়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পান। তার পরিবারের আট সদস্য নিয়ে মাটির ঘর, গোয়াল ঘর, টিনের ছাপড়া ঘরেই কাটিয়েছেন জীবনের বেশির ভাগ সময়। পৈতৃক সূত্রে সামান্য জমি আছে। কিন্তু ঘর বানানোর সামর্থ্য নেই। কিন্তু বাকাকুড়া গ্রামের আবু বকর সিদ্দিক পেয়েছেন আধপাকা দুই কক্ষের ঘর। শুধু আবু বকর নয় শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার এমন ঘর পেয়েছে ৪৩টি গৃহহীন পরিবার।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগসহনীয় বাসস্থান নির্মাণ’ কর্মসূচির আওতায় অসচ্ছল, হতদরিদ্র, বিধবা মহিলা পরিবারসহ উপজেলার ৪৩টি পরিবারের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদের তত্ত্বাবধানে এসব পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। পরিবারগুলোকে ঘর তৈরি করে দেয় সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে সরকারের ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩১ টাকা। বাড়িগুলো ইট ও অত্যাধুনিক রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে দরজা-জানালা কাঠের নির্মিত। প্রতিটি বাড়িতে দুটি করে শোয়ারঘর, একটি রান্নাঘর, একটি স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্রিন ও ঘরের সামনে একটি বারান্দা।
ঘর পেয়ে উপজেলার বাকাকুড়া গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকের পরিবার আনন্দিত। তিনি বলেন, ‘জীবনে ভাবতেও পারিনি এমন ঘরে ঘুমাব। সবকিছু আমাদের স্বপ্নের মতো লাগছে। অনেক কষ্টের জীবনে একটি পাকা বাড়ি পেয়ে আমরা পরিবারের প্রত্যেক সদস্য খুশি।’
উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের বিধবা রহিমা খাতুন বলেন, ‘ভাঙ্গা-চোরা ঘরে বসবাস করছিলাম। নতুন ঘর নির্মাণের সাধ ছিল। কিন্তু আমার নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। অসহায় বিবেচনা করে ইউএনও স্যার আমার ভিটেয় নতুন ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। দুর্যোগ সহনীয় ঘর পেয়ে মাথা গোঁজার নিশ্চয়তা পেলাম। সংসারে ঘরের অভাব পূরণ হলো।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগসহনীয় বাসস্থান তৈরির এই উদ্যোগ ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা মেনে গৃহহীনদের আবেদন যাচাইপূর্বক প্রকৃত অসচ্ছল পরিবারকে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ঘর পেয়ে পরিবারগুলো খুব আনন্দিত। প্রতিটি পরিবার এখন নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারবে।’