‘তথ্যের অধিকার, সুশাসনের হাতিয়ার, তথ্যই শক্তি, দুর্নীতি থেকে মুক্তি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে আজ বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস পালিত হয়েছে। নালিতাবাড়ীর সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-টিআইবির উদ্যোগে তথ্য অধিকার বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ উপলক্ষে সকালে নালিতাবাড়ী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের মিলনায়তনে ঐ কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তথ্য অধিকার বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। কুইজ প্রতিযোগিতা শেষে টিআইবির আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক এস এম আতিকুর রহমান সুমনের সঞ্চালনায় সনাক সভাপতি জোবায়দা খাতুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, সনাক সদস্য এস এম রফিকুল ইসলাম, প্রেসক্লাব, নালিতাবাড়ীর সভাপতি এমএ হাকাম হীরা, সহ-সভাপতি লাল মোহাম্মদ শাহজাহান কিবরিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান, ঐ কলেজের অধ্যক্ষ একে এম মোবাশে^রুল মঞ্জিল, উপজেলা দুপ্রকের সা. সম্পাদক আব্দুল মান্নান সোহেল প্রমুখ।
উপস্থিত আলোচকবৃন্দ তথ্য অধিকার আইনের আত্ততায় ব্যবসা, রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যকে অন্তর্ভুক্ত করা; তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করা; যেমনÑ ব্যতিক্রম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ক্ষেত্রসমূহে জনস্বার্থের প্রাধান্যের বিষয়টি বিবেচনার রাখা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা। তথ্য ফরম পূরণের আবশ্যকতা হিসেবে তথ্য কর্মকর্তার নাম উল্লেখকরণ অপসারণ করা। সুুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় তথ্য অধিকার আইনে অনুরোধকারীর ব্যক্তিগত তথ্যের বিবরণ প্রদানের বাধ্যবাধকতা বাদ দিয়ে অনুরোধকারী ব্যক্তি প্রদত্ত নির্দিষ্ট যে-কোন ঠিকানায় তথ্য প্রদানের সুযোগ রাখা। তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিধান করা। তথ্য অধিকার আইনের পরিপন্থি’ বিদ্যমান আইনসমূহ সংস্কার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাতিল করা।
জাতীয় সংসদে পাশ হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ৩২ ধারাসহ বাক্স্বাধীনতার পরিপন্থি অন্যান্য ধারা বাতিল করা। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য প্রাপ্তির সঠিক আবেদন তৈরিতে সহায়তার জন্য জনসাধারণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ‘তথ্য ও পরামর্শ ডেস্ক’ স্থাপন ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অনলাইন উদ্যোগ গ্রহণ করা। সকল কর্তৃপক্ষকে তথ্য অধিকার আইনের ধারা ৫ ও সংশ্লিষ্ট প্রবিধানমালা, ২০১০ অনুযায়ী তথ্য সংরক্ষণ এবং স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের নীতিকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া। তথ্য অধিকার আইনকে অধিকতর সময়োপযোগী করার লক্ষে তথ্য কমিশনের উদ্যোগে আইনটি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত আপিলসমূহ বিশ্লেষণ করা।
সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে পরবর্তী দশকের জন্য বাস্তবায়ন কৌশল এবং আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া; দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জ্ঞান ও তথ্য প্রদানে প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা অর্জনে বিভিন্ন কারিগরি ও অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা জোরদার করা। তথ্য-প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার ও আইন বাস্তবায়নের গতি, তথ্য প্রদানে কর্তৃপক্ষের দক্ষতা ও সংগতি পর্যবেক্ষণে তথ্য কমিশনের ক্ষমতা বাড়ানো।
এ প্রেক্ষিতে তথ্য কমিশনের কার্যক্রমের গতিশীলতা ও কার্যকরতা বৃদ্ধির লক্ষে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সম্পৃক্ততায় কমিশনের স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা এবং এর বাস্তবায়নে বার্ষিক জাতীয় বাজেটে অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিতের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা। তথ্য অধিকার আইনের অধিকতর বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রমে সুশীল সমাজ, জনগণ ও গণমাধ্যমের কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের নিকট সভার মাধ্যমে অনুরোধ জানান।
আলোচনা সভা শেষে কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়।