শেরপুর জেলা সদরকে অন্তর্ভুক্ত করে শেরপুরে রেললাইনের দাবীতে জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটির আয়োজনে সংগৃহিত গণস্বাক্ষর এবার স্থানীয় সংসদ সদস্য হুইপ আতিউর রহমান আতিকের নিকট হস্তান্তর করা হয়। সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় শহরের চকবাজার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এসব গণস্বাক্ষর হস্তান্তর করেন জনউদ্যোগ আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ।
এসময় প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের স্বাক্ষর সহ হুইপের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপি ও গণস্বাক্ষর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার মো. নজরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বেলাল, জেলা মহিলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক নাসরিন রহমান, শহর আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক মানিক দত্ত। এছাড়া পৌর লেডিস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদিকা আঞ্জুমান আলম লিপি, হিন্দু সম্পত্তিতে নারী উত্তরাধিকার বাস্তবায়ন জেলা কমিটির আহ্বায়ক সম্পা দত্ত, জনউদ্যোগ সদস্য সচিব হাকিম বাবুল, জেলা উদীচী সভাপতি তপন সারোয়ার, জেলা মহিলা পরিষদ যুগ্ম-সম্পাদিকা আঞ্জুমান আরা যুথী, আইইডি প্রোগ্রাম অফিসার এসএম ইমতিয়াজ চৌধুরী শৈবাল, বিতার্কিক শুভংকর সাহা সহ স্বেচ্ছাসেবী এবং আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপি গ্রহণ করে হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি বলেন, শেরপুরে রেললাইন স্থাপনের বিষয়টি সরকারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ বিষয়ে মহান জাতীয় সংসদেও আমি আমার বক্তব্য তুলে ধরেছি। সারাদেশকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার যে পরিকল্পনা বর্তমান সরকার গ্রহণ করেছে, তাতে দ্বিতীয় ফেউজে শেরপুর জেলায় রেললাইন নির্মাণের প্রস্তাবনা রয়েছে।
শেরপুরে দ্রুত রেললাইন স্থাপনের দাবীতে গত ১০ জুলাই শহরের চকবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়। সেদিন ১০ হাজার মানুষের স্বাক্ষর সম্বলিত প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লিখিত স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লিখিত আরেকটি স্মারকলিপি সহ আরও সাড়ে তিন হাজার গণস্বাক্ষর হুইপ আতিক এমপি’র নিকট প্রদান করা হয়।
এদিকে, ১৪ জুলাই রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দানকালে শেরপুরের জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব এসডিজি বাস্তবায়ন এবং পর্যটন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শেরপুর জেলায় রেললাইন নির্মাণের দাবী তুলে ধরেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, শেরপুরে রেলপথ স্থাপন করার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার ১৯৩০-৪০ এর দশকে প্রথম পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে পুনরায় জামালপুর-রাংটিয়া ভায়া শেরপুর রেলপথ স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়। কিন্তু সেটিও আর আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৪ সালের ৮জুন তৎকালীণ রেলমন্ত্রী পিয়ারপুর থেকে শেরপুরে রেলপথ স্থাপনের ঘোষণা দেন। এজন্য প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই কাজও শুরু হলেও অদ্যাবধি অগ্রগতি খুব একটা দৃশ্যমান হয়নি। সম্ভাবনাময় শেরপুর জেলার পর্যটন শিল্পের বিকাশ, নাকুগাঁও স্থলবন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়ন, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার লক্ষ্যে শেরপুরে রেল পরিবহন চালু এখন সময়ের দাবী বলে উল্লেখ করা হয়।