সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার বহু কৃষক ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এবার বোরো মৌসুমে উৎপাদন খরচের চেয়ে ধানের দাম কম হওয়ায়, কৃষকদের লোকসান গুনতে হয়েছে। হাতে টাকা না থাকায় ছেলেমেয়েদের জামা-কাপড়সহ প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পারছেন না কৃষকরা। তাই শেরপুরের কৃষকদের ঘরে নেই ঈদের আনন্দ। হতাশা কাজ করছে কৃষক পরিবারের সন্তানদের মাঝে।
আখের মাহমুদ বাজারের ছমির মিয়া বলেন, ‘বাফু, ধানের দাম কম এবং কামলার ময়না বেশি, এবার ধানে বিঘায় (৩৩ শতাংশ) প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। এত টাকা লোকসান হলে ঘরে ঈদের আনন্দ থাকবে কেমনে? এক মণ ধান বিক্রি করে একটি লুঙ্গি ও পাঁচ মণ ধান বিক্রি করে মেয়ের জামা কিনছি। এখনও ছেলে-মেয়ের নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতে পারি নাই। ২০ মণ ধান বিক্রি করলেও ঈদে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করা সম্ভব না।’
রাংটিয়া গ্রামের কৃষক ফরিদ মিয়া বলেন, ‘দেড় মণ ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিকের মূল্য দিছি। ধানে লোকসান হওয়ায়, ঈদে ছেলেমেয়েদের জন্য কিছুই কিনতে পরেনি।’
নকলার কৃষক জমির হক বলেন, ‘এবার চার বিঘা জমিতে ধান আবাদ করি। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে। ২০ মণ ধান বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরি দিয়েছি। এখন গোলায় অল্প কিছু ধান আছে। পরিবারের কোনও সদস্যকেই ঈদের জামা-কাপড় কিনে দিতে পারিনি। ধানের দাম বেশি থাকলে হয়তো আরও কিছু ধান বিক্রি করে তাদের নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতে পারতাম।’
কৃষকদের দাবি, সরকার ধান কাটা ও মাড়াই করার জন্য এলাকায় যন্ত্র সরবরাহ করুক। সেইসঙ্গে ন্যায্যমূল্যে ধান কেনার ক্ষেত্রে সুদৃষ্টি দিক।
এবার শেরপুরের ৫ উপজেলায় চলতি মৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলাতে ৮৯ হাজার ৫ শ ৫৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৯১ হাজার ৭২ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে বলে জেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।