পুরান ঢাকার চকবাজারে সাততলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। লাশের সংখ্যা আরও বাড়তে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর নিহতের সঠিক সংখ্যা জানা যাবে।
বুধবার রাত ১০টার দিকে এ আগুন লাগে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি কাজ করছে বিমানবাহিনীর চারটি হেলিকপ্টার।
ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা জুয়েল রহমান রাত ২টায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ভবনের সামনে দিয়ে যাওয়া একটি প্রাইভেটকারের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে ওই ভবনের নিচ তলায় থাকা কেমিক্যাল গুদামে আগুন লাগে।
এ ঘটনা আহত হয়েছেন আরও অর্ধশত। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুরিহাট্টা মসজিদ গলির রাজ্জাক ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা যায়। আগুন লাগার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও সরু গলি হওয়ায় ভবনের কাছে যেতে সক্ষম হয়নি। ফলে রাত সাড়ে ১২টার পর পাশের আরও প্রায় চারটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, চকবাজার থানার সামনে গাড়ি রেখে সেখান থেকেই পাইপের মাধ্যমে পানি নেওয়া হয়। এ ছাড়া আশপাশের ভবনের পানির ট্যাংক থেকেও পানি সংগ্রহ করে ফায়ার সার্ভিস। রাত ৩টায় আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
এদিকে আগুন লাগার পর চকবাজার এলাকার গ্যাসলাইন থেকেও ওই সময় আগুন বের হচ্ছিল। এ সময় ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, রাজ্জাক ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা ছিল। ভবনের পাশেই ছিল বেশ কিছু রেস্তোরাঁ। সেগুলোর প্রতিটিতে চার থেকে পাঁচটি করে গ্যাসের সিলিন্ডার রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে যাওয়ায় এসব গ্যাস সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়েছে বলে ধারনা করছেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে এক কেমিক্যাল গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের প্রাণহানি হয়।