শেরপুরে নারী রক্তদাতাদের প্রথম সংগঠন “নারী রক্তদান সংস্থা”র প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বার্ষিক বিচিত্রা “ফোঁটা”র মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। ২০ অক্টোবর শনিবার শহরের আলীশান রেস্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টারে মোড়ক উন্মোচন করা হয়। প্রতিভা নন্দী তিথির সম্পাদনায় এই বিচিত্রায় সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা ও সদস্যদের ৯টি কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। কবিতাগুলো শেরপুর টাইমসের পাঠকদের জন্য প্রকাশিত হলো-
নিস্কৃতি
জয়শ্রী দাস লক্ষীমঞ্জুলীকা পালিয়ে শেসে
বিয়ে করলো পুলিন বাবুকে
পড়ে কিশোরী মনে জেগেছিল চমক।
ইদানিং জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতায়
দেখি.
সর্বত্র ঘৃণিত নেকড়ের লালসা
ক্ষত লাঞ্চিত ষোড়শী বোন,
ধর্ষিতা মা-নাবালিক মেয়ে-
হ’ল নিক্ষিপ্ত অন্ধ গলিতে
বিদেশে বিভূয়ে।
তুমুল নারী মুক্তি আন্দোলন
-আধুনিক বিশ^ময়।
তবু হতে হয়…..
পিয়ারী খুকু শবমেহের
প্রতিদিন।
পালিয়ে তো পাবেনা রেহাই
কিম্বা কবিগুরুর আশীর্বাদ
অতএব-
বেরিয়ে এসো দিবালোকে
-এই রাজপথে
হাতে হাত ধরে
ছিনিয়ে নাও বঞ্চনার খর্গ।
নিস্কৃতি আসবেই।###
বিষাদের ফেরিওয়ালা
(ফারহিম তাসনোভা মুমু)হেঁটে চলেছি আজ বহু শতাব্দী ধরে তোমাদের শহরে,
বহু নামহীন ভোরে বড্ড বেমানান এই আমি
সুখ খুঁজে চলেছি বিলাসিতার ছলে।বহুদিন হয় আমি গোধুলী দেখিনা
বহুদিন হয় রংধনু দেখি না
সেদিনের একমুঠো বিষাদ
তার ডালপালা মেলে আজ।বহু দূর দিগন্তে বিস্তৃত ক্লান্ত
আমি বিষাদের ছায়ায় আশ্রয় খুঁজি !!
তোমাদের এ শহর ভালোবাসা চেনেনা
ছোটো ছোটো সুখ চেনে না
এ শহর তোমাদের ই থাক।ঐ রংহীন গোধুলী গুলো
ওরা ও তোমাদের থাক
বড্ড বেমানান এই আমি
বিষাদ ফেরি করি
বোকার মত সুখ খুঁজি…###
নিশিকন্যা
(তিথি নন্দী)এই শহরে রাতপরীরা
খুব ঘৃণিত যারা,
সারানিশি জেগে কাটায়,
দিনে ঘুমায় তারা।রাত্রিকালে ভদ্র সমাজ
ওদের ই পা চাটে
দিনের আলোয় ছিটকে গিয়ে
থুথু ফেলে ঘাটে।ওরও চোখে স্বপ্ন ছিল
বাঁধবে সুখের ঘর।
সুখগুলো সব বেচে দিল
প্রেমিক স্বার্থপর।রাতপরীদের গন্ধ আসে
নামীদামীর ঘামে।
ওরাই কেবল সবটা খোয়ায়
নিষিদ্ধতার নামে।তপ্ত-শরীর, কাম-বাসনায়;
নেই রে ওদের সুখ।
ভোর রাতে যে ওরাও খুঁজে,
ভালবাসার বুক।সন্ধ্যা হলেই আবার পরী
ঘটা করে সাজে।
কায়দা করে কাজল পড়ে
রাত্রি জাগা চোখে।###
অবাক পৃথিবী
(তমা ঘোষ)পৃথিবী ভ্রমণকারী মানুষের কথা জানি এক-
যার মায়ের মৃত্যু হয়েছিলো রক্ত শূন্যতায়,
বাবা ঘরে ফেরে নি জুয়ায় সর্বস্ব হারিয়ে।ছোট বোনকে নিয়ে যে লিখেছে
অসংখ্য দিনের অনাহার আর নিয়তির নিষ্ঠুরতম গল্প।
যার প্রিয়তমা বধূ মরেছে ক্যানসারে; সন্তান হয়েছে জন্মান্ধ!পৃথিবী দেখতে কেমন তার কাছে?
যার পৃথিবী এমন…!
পৃথিবী কি সবসময় সবার কাছে সুন্দর?###
অংঙ্ক
(সুস্মিতা রাণী শিল)অংঙ্কে আমি হিরো,
বছর বছর পেয়ে থাকি
দুইটি করে জিরো।বীজগণিতে অতিপাকা
সূত্রে শুধু ভুল,
পাটিগণিত করতে গেলে
পাকে মাথার চুল।জ্যামিতি আকঁতে গেলে
একে ফেলি ফুল।
শুধু,
এটাই আমার ভুল।###
বঙ্গবন্ধু
(ফারজানা হিমু)বাংলার বন্ধু তুমি
তাই নাম তোমার বঙ্গবন্ধু, জাতির জন্মদাতা তুমি
তাই নাম তোমার বঙ্গবন্ধু, জাতির জন্মদাতা তুমিতাইতো জাতির পিতা তুমি।
হুংকার গর্জনের প্রতীক তুমি
তাইতো তুমি সেরা বক্তা,
জাতির স্বপ্ন ছিলো তোমাতে
তাইতো তুমি জাতির স্বপ্নপ্রণেতা।স্বাধীনতা দিয়েছো বেচেঁ থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছ সোনার বাংলার,
আশার প্রদীপ ছিলে যে জাতির আজও আছো জাতির
আজও আছো জাতির বুকজুড়ে, নেতা হয়ে বাঙালীর।বাংলা বহমান
চিরকাল রবে বাংলায় তুমি মহীয়ান,
নেতা তুমি আমার
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।###
আলো
(মাধুরী রয়)সভ্যতা আজ কোথায় দাঁড়িয়েছে?
মানবতার আকাশটা কালো মেঘে ঢেকে আছে।স্বার্থপরতার প্রতিটি বিবেক আজ অন্ধকার;
অস্থির এই পৃথিবী কাঁদছে অবাক হয়ে-সবাই কেন নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত,
কেনো মানবতা আজ হাহাকার?গুপ্তচর আর নিন্দুকের কবে হবে অবসান
থাকবেনা হিংসা, থাকবেনা বদ্ধ কারাগার?ফিরে পাবো নতুন আলো!
নতুন আলো।।###
রক্তদান
(ইন্দ্রাণী বিশ্বাস ঝুমা)রক্তদান রক্তদান
কি যে একটা নেশা
রক্তদানে পেয়েছি
আলোর পথের দিশা।।আমার রক্তে হয় যদি
কারে উপকার
মন ভরে যায় আনন্দে
গৌরব অপার।।নারী রক্তদানের মেয়েরা
সব যাও এগিয়ে
নতুন কিছু তোমাদের
অপেক্ষায় আছে দাড়িয়ে।।ভয় পেয়োনা রক্তদানে
মনে রাখবে বল
এগিয়ে যাবো আমরাই
নবীন, তরুনীর দল।।নতুন পৃথিবী আমাদের জন্য
করছে প্রতীক্ষা
রক্তদানের জন্য মনে মনে
করবো প্রতীজ্ঞা।।###
এখন সময় দ্রোহের
(মাহমুদা খাতুন মনিকা)আকাশ নয়,
রঙিন প্রজাপতি নয়
এখন সময় দ্রোহের।মনখারাপ করা দুপুর নয়,
বিষণ্ণ বিকেল নয়
আজ দিন এসেছে গনগনে রোদমাখা রাগের।সুরেলা গান নয়, মিষ্টি কবিতা নয়
দিনরাত রাস্তাগুলো যেন কাঁপতে থাকে
একের পর এক স্লোগানের উত্তাপে।কোমলতা আর নেই আজ নারীর মর্মে
ঘৃণা আর ক্ষোভ উপচে পড়ে
সেই নিত্যদিনের মধুর কণ্ঠে।প্রেমের সময় তো পায় না সে
সমস্ত কাজ ফেলে মিছিলে যায় দলে দলে,
শহরের সব পথ আজ গিয়েছে মিলে, উদ্দীপ্ত শাহবাগে।