জামালপুর জেলায় জনপ্রিয় এবং লাভজনক হয়ে উঠেছে লেবু চাষ। জেলার ব্রহ্মপুত্র চরের অনাবাদী জমিতে লেবু চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন অনেক কৃষক। অল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকে পড়েছেন লেবু চাষের প্রতি।
লেবু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,বাগানে লেবু গাছ রোপনের এক বছর পরেই ফলন ধরতে শুরু করে। এই ফল প্রতি মাসেই হয় এবং বারো মাস ধরে চলতে থাকে এরপর একবার লেবু গাছের বাগান করলে বা লাগালে পরবর্তী পনের থেকে বিশ বছর পর্যন্ত লেবু পাওয়া যায় । কারণ লেবু গাছের গোড়া থেকে আবার লেবু গাছ জন্মায়। পরবর্তীতে আর লেবুর চারা রোপন করতে হয় না। শুধু প্রতি বছরগাছের গোড়ায় সার দিতে হয় এবং কীটনাশক দিলেই হয়।
জামালপুর জেলার চরাঞ্চলে প্রায় তিনশ হেক্টরের বেশি জমিতে এখন বিভিন্ন জাতের লেবু চাষ হচ্ছে। জেলায় লেবুর উৎপাদনের পরিমাণ দাড়িয়েঁছে ১ হাজার ৫০০ মেট্টিক টনের বেশি।বিপুল চরের জমি প্রতিবছর অনাবাদি থাকে। এসব অনাবাদি জমিতে লেবু চাষ করা গেলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
জামালপুর শহরের বাসিন্দা মকসেদ মিয়া ও হোসেন আলী ব্রহ্মপুত্র নদের নাওভাঙ্গা চরে প্রায় ৭ একর জমি দীর্ঘমেয়াদী লিজ নিয়ে শুরু করেছিলেন বিভিন্ন জাতের লেবুর চাষ। সব খরচ বাদ দিয়ে লেবু বিক্রি করে তাদের মাসিক আয় দাড়িয়েঁছে প্রায় এক লাখ টাকার ওপরে।
জামালপুর সদরের ঘুঘুরাকান্দি গ্রামের মো. আহসান হাবীব জানান, তিনি টার জমির ৩০ শতাংশ অংশে লেবু চাষ করে ঈদের সময় ৩০ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করেছেন। প্রতি বছরে তিনি প্রায় ৩ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেন।
চর দুবনাই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. খায়রুল মাস্টার বলেন, ‘লেবু বাগান করে কম খরচে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায় । তাই আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি এক বিঘা জমিতে লেবুর চারা রোপন করেছি ।’
জামালপুর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আবু হানিফ বলেন, ‘লেবু এমন একটি ফসল এটি একবার চাষ করলে দীর্ঘদিন ফলন পাওয়া যায়। এতে কম খরচে মুনাফা অনেক বেশি। চরের জমিতে লেবু চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।