শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় এবছর তিনহাজার একর জমিতে মুড়ি ফসল (বোনাস)ধান হয়েছে।
শনিবার (২২ জুন) উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে এসব তথ্য জানা ও ধানকাটর দৃশ্য দেখা গেছে।
এতে করে উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝে ঈদের আগে ও পরে এই বোনাস ধান পেয়ে বাড়তি আনন্দ যোগ হয়েছে। বোরধান কাটার একমাস পর মুড়ি(নাড়া)থেকে শিষ দিয়ে একর প্রতি ১২-২০ মণ ধান বাড়তি পাওয়ায় কৃষকরা ধারুণ খুশি।
উপজেলা কৃষি অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানায়,উপজেলায় চলতি মৌসুমে তিনহাজার একর জমিতে মুড়ি ফসল( ধান) হয়েছে। যে সব জমিতে আগাম ধান যেমন, হিরা ধান,পাইওনিয়ার ধান, ব্রি-২৬,ব্রি-২৮ ধান লাগানো একমাস আগে কাটা হয়েছে, সেই ধান গাছের মুড়ি থেকে আবার শিষ দিয়ে বোনাস ধান হয়েছে। এতে কৃষকের সার,তেল,কীটনাষক ও বীজ কোনটিই লাগেনি। কৃষক শুধু ধান কেটে মাড়াই করছে।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর উপজেলার কাকরকান্দী,নন্নী,পোড়াগাঁও,বাঘবেড়,রামচন্দ্রকুড়া,মরিচপুরান ও নালিতাবাড়ী ইউনিয়নে এ ধান বেশী হয়েছে। খরচ ছাড়া এ ধানের ফলন কিভাবে বাড়ানো যায় তাঁর জন্য গত বছর স্থানীয় এমপি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর নির্দেশনায় ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউটের তিন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নালিতাবাড়ী মাট পর্যায়ে এসে পর্যবেক্ষণ করে গেছেন।
তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষক ধান কাটার পর এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতি একরে ১৫ কেজি ইউরিয়া ও ১৫ কেজি পটাশ দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ঐ জমিতে গরু,ছাগল যেন না নামে তার প্রতি খেয়াল রাখার জন্য বলা হয়েছে। স্থানীয় কৃষি অফিস সেই মোতাবেক প্রচারণার জন্য লিফলেট তৈরি করে কৃষকদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন। এতে গত বছরের তুলনায় কৃষক আরো সচেতন হওয়ায় এ বছর তিনহাজার একর জমিতে মুড়ি ধান হয়েছে। এ ধান ঈদের আগে ও এখন কাটা হচ্ছে এবং একমণ ধান বাজারে প্রায় একহাজার টাকা দামে বিক্রি করতে পেরে কৃষকের মাঝে ঈদের আনন্দের সাথে বাড়তি আনন্দ যোগ হয়েছে।।
্
কাকরকান্দী ইউনিয়নের বিন্নিবাড়ী গ্রামের মো.নজরুল ইসলাম বলেন,আমার দশকাঠা জমিতে হিরা ধান লাগাইছিলাম। আগে পাইছি ২৫মণ আর এহনা পাইছি সাত মণ। এই বোনাস ধান পেয়ে আল্লাহ রহমতে অহনার(এই) ঈদটা বালাই কাডাইবাম।
রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের কালাকুমা গ্রামের মো.মোস্তফা বলেন, সাতকাডা জমিতে বোরধান পাইওনিয়ার লাগাইয়া ২০ মন পাইছিলাম। এহন শীষ থেকে কোন যতœ ছাড়াই ধান পাইছি ৫ মণ।এতে আমি ধারুন খুশি। অহনা এই ধান বিক্রির টেকা দিয়া আমন ধানের বীজতলা তৈয়ারি করছি।্এতে করে আমায় প্রায় একএকর আমন ক্ষেত চাষাবাধের জন্য খরচের চিন্তা করতে হবে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.শরিফ ইকবাল বলেন, মুড়ি ফসল (ধান) রক্ষার জন্য উপজেলার কৃষকদের আমরা উদ্ভোদ্ধ করেছি,কৃষি অফিসের প্রচারণার ফলে এ বছর আবাদ বেড়েছে অনেক। যারা একটু যতœ নিয়েছেন তারা একরে ১৮-২০ মণ করে ধান পাচ্ছেন। আঁখ,কলা ও ধানকে বলা হয় মুড়ি ফসল। এ গুলো যতœ করলে আবার ফসল পাওয়া যায়।