নাঈম ইসলাম : শেরপুর পৌর শহরের একটি বেসরকারি স্কুলের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে তাবাসছুম প্রীতি, ইজিবাইকে করে কলেজ মোড় হতে খোয়ারপাড় এসেছে । চালককে তিনটি ২টাকার কয়েন দেন প্রীতি । প্রীতির কাছে কাগজের টাকা না থাকায় ভাড়া না নিয়েই চলে যান অটো চালক ।
নৌহাটা পৌর গরুর হাটে একটি ভাসমান দোকান থেকে চা পান নিয়ে ৪টি ৫টাকার কয়েন দেন চাঁনমিয়া । দোকানি একটির বেশি কয়েন নিতে রাজি হননি । এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হওয়ার পালা । পরে আশেপাশের লোকজন দুজনকে শান্ত করে ।
তাবাসছুম প্রীতি বা চাঁন মিয়ার মতো আরও অনেকের কয়েন নিয়ে এ বিরম্বনার শেষ নেই । সরকারি কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই কয়েন নিতে চাইছেন না । এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে গণ পরিবহন ও ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে । হাট বাজার সহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েন দেখলেই ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে শুরু হয়ে যায় বাক-বিতন্ডা । কোন পক্ষই এসব ধাতব মুদ্রা নিতে রাজি নয় ।
শেরপুর জেলা ও উপজেলা গুলোতে এক টাকা, দুই টাকা ও পাঁচ টাকার কয়েন নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী সহ সাধারণ মানুষ । এক টাকা ও দুই টাকার ক্রয় ক্ষমতা আগের চেয়ে হ্রাস পাওয়ায় ফেরিওয়ালা, কাচাঁবাজার, মোদির দোকান, মিস্টির দোকান, গণ পরিবহনের ভাড়া, ব্যাংক সব ক্ষেত্রেই কয়েন নিয়ে ভোগান্তি ।
আখের মামুদ বাজারে মুদি দোকানদার জামান মিয়া জানান, কয়েন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছেন তাদের মত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা । অনেক পণ্য রয়েছে যেগুলো বিক্রি করতে এক টাকা, দুই টাকা কিংবা পাঁচ টাকার কয়েন ছাড়া বেচাকেনা করা সম্ভব নয় । কিন্ত কোম্পানীর লোকজন, মহাজন, ব্যাংক কয়েন তো দূরের কথা পাঁচ টাকার নোটও নিতে নারাজ ।
বেসরকারি এনজিও সংস্থা আশার মোবারকপুর শাখা অফিসার আব্দুল মোতালিব বলেন, আমাদের কার্যক্রম যেহেতু গরিব মানুষদের নিয়ে তাই আমরা খুচরা টাকা ও অল্প পরিমাণে কয়েনও গ্রহন করি । বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েন বাতিল ঘোষণা না করলেও মানুষ এগুলো আর নিতে চায়না । প্রায় সব খানেই কয়েন আদান-প্রদান নিয়ে প্রকট সমস্যা চলছে ।