জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সেনাবাহিনী এখন আগের চেয়ে আরও বেশি সুশৃঙ্খল ও প্রশিক্ষিত বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ।
সৈয়দপুর সেনানিবাসে দুই দিনব্যাপী ইএমই কোরের কর্নেল কমান্ড্যান্ড অভিষেক অনুষ্ঠান, বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন এবং পঞ্চম কোর পুনর্মিলনী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত প্যারেডে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। বুধবার দুপুর ১২টায় সৈয়দপুর সেনানিবাসে প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও আধুনিক সেনাবাহিনীর রূপকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম স্মরণ করে বলেন, ‘যাঁর আহ্বানে দীর্ঘ নয় মাসের মরণপণ যুদ্ধের মাধ্যমে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেই ইএমই কোরের সদস্যসহ যারা শহীদ হয়েছেন তাদের কথা চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে জাতি।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে সীমিত সম্পদ দ্বারা জাতির পিতা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠনে উদ্যোগী হন এবং তাঁর নেতৃত্বই বর্তমান সেনাবাহিনীর গোড়াপত্তন হয়। এ বাহিনীর সদস্যরা বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়েরর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও তাদের কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে।’
আবদুল হামিদ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের রূপকল্প ২০২১ আলোকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফোর্সেস গোল-২০৩০ চূড়ান্তকরণ ও পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে।’ এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি পরিপূর্ণ, আধুনিক, কার্যকর ও যুগোপযোগী বাহিনীতে রূপান্তরিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপতি।
ইএমই কোর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি কোর। তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই যুগে দেশের সেনাবাহিনীতে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে সর্বাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ও সরঞ্জামাদি। ইএমই কোরের সদস্যদের কঠোর পরিশ্রমী, অধ্যাবসায় ও উন্নত প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সামরিক জীবনে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। তাই তিনি প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ২০১৪ সাল থেকে পুরুষ রিক্রুটদের পাশাপাশি নারী রিক্রুটদের প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। তাদের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
আবদুল হামিদ বলেন, বর্তমান সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে ইএমই কোরের সাংগঠনিক ও অবকাঠামোতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। নেতৃত্বের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রেখে সব কাজে এগিয়ে যাবেন ইএমই কোরের সদস্যরা।
এর আগে রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে প্যারেড কমান্ডার লে. কর্নেল সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সেনবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান, কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মাসুদ রোজোয়ান, কমান্ড্যান্ড ইএমইসিএন্ডএসএস ব্রিগিডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আনোয়ার, ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও রংপুর এরিয়া কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ রাজ্জাক, নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম, পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।