শেরপুরে জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস ২০২২ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালি অনুষ্ঠিত।
জেলা সদর হাসপাতাল মিলনায়তনে সিভিল সার্জন অফিস ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল শেরপুরের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরএমও ডাঃ মোঃ খায়রুল কবির সুমনের সঞ্চালনায় ও জেলা সদর হাসপাতালের উপপরিচাক ডাঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে দিবসের মূল বক্তব্য ও প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ডাঃ মোবারক হোসেন, সিনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু)ডাঃমোঃ মোশাররফ হোসেন মরণোত্তর চক্ষু দানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজিয়া সামাদ ডালিয়া হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম ও স্বেচ্ছায় রক্ত দানে সবাইকে নিয়ে আসতে আহ্বান জানান।অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রেট ক্রিসেট যুব প্রধান ইউসুফ আলি রবিন ও রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর শেরপুর জেলা শাখার ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এ এম আব্দুল ওয়াদুদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোবারক হোসেন,সিনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু)ডাঃমোঃ মোশাররফ হোসেন,শেরপুর ডাঃনাহিদ কামাল কেয়া,ডাঃতাশরিয়া বিনতে ফারুক তুহিন, আরও উপস্থিত ছিলেন রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের শেরপুর জেলা শাখার সদস্য ও রেট ক্রিসেট শেরপুর ইউনিটের সদস্যগণ।
জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস২০২২ এর এবারের প্রতিপাদ্য
তোমার চোখে বিশ্ব
দেখুক অন্য কোন প্রাণ
রক্তদানের মহান ব্রতে হও আগুয়ান।
অনুষ্ঠানে সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের শেরপুর জেলা শাখার ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এ এম আব্দুল ওয়াদুদ পূর্ণাঙ্গ ব্লাড ব্যাংক স্থাপন ও রোগীদের সুবিধার্থে তা ২৪ খোলা রাখার দাবি জানান।
জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবসের আলোচনা সভা ও র্যালি শেষে একজন মুর্মূষু রোগীকে রক্তদান করেন রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের একজন নারী সদস্য।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন,হিমোগ্লোবিনের অভাব অথবা থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণে অনেক মানুষ রক্তশূন্যতায় ভোগে। তখন তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হয় অন্যের রক্ত। এই রক্ত যেহেতু ক্রয় করা যায় না, সেহেতু আপনার আমার রক্তদানের ওপরই নির্ভর করে তাদের বেঁচে থাকতে হয়। এছাড়াও বিভিন্ন হাসপাতালে ও ক্লিনিকে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসায় প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়।দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এখনো বাংলাদেশে রক্তের অভাবে মারা যায় অনেক রোগী। আশার কথা এই যে, এখন তরুণ সমাজ রক্তদানে অনেকটাই এগিয়ে আসছে। রক্তদানের কিছু উপকারিতা রয়েছে। ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী যে কোন সুস্থ মানুষ, যাদের ওজন ৪৫ কেজির বেশি, তারা প্রতি চার মাস পরপর রক্তদান করতে পারেন। চার মাস পরপর মানবদেহে নতুন রক্ত তৈরি হয় এবং রক্তকণিকাগুলো এমনিতেই মারা যায়।
রক্তদানের মাধ্যমে একজন মুমূর্ষু মানুষকে বাঁচানোর মতো কাজে শরিক হতে পেরে নিজের মানসিক তৃপ্তি মেলে। বর্তমানে প্রচার ও সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে রক্তদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। নিমতলীর দুর্ঘটনা অথবা সাভার রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির সময়ও আমরা দেখেছি মানুষ লাইন দিয়ে রক্তদান করছে। এতে রক্ষা পেয়েছে অসংখ্য মানুষের জীবন।
মরণোত্তর চক্ষুদান হলো মৃত্যুর পর কর্নিয়া দান করার জন্য জীবিত অবস্থায় অঙ্গীকার করা। মৃতের চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ করে অন্যজনের চোখে লাগানোর ইচ্ছা ও সম্মতিই ‘মরণোত্তর চক্ষুদান’ নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, মৃত্যুর পরও মৃত ব্যক্তির বৈধ অভিভাবকরাও কর্নিয়া দান করতে পারেন।মারা যাওয়ার পর মৃত ব্যক্তির কর্নিয়া ৬ ঘণ্টার মধ্যে সংগ্রহ করতে হবে। কোথাও কোথাও ১২-২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। ৬ ঘণ্টার মধ্যে কর্নিয়া সংগ্রহ না করলে কর্নিয়া সেলের সংখ্যা কমে যায়। কর্নিয়া হলো চোখের সামনের স্বচ্ছ অংশ, যার মাধ্যমে আলো চোখের মধ্যে প্রবেশ করে। কোনো কারণে কর্নিয়ায় ঘা হলে বা কর্নিয়া অস্বচ্ছ হয়ে গেলে ওই চোখে আলো প্রবেশ করতে পারে না।